শেষ বৈঠকে দোয়া মাসুরা ছাড়া অন্য দোয়া পড়া যাবে?
শেষ বৈঠকে দোয়া মাসুরা ছাড়া অন্য দোয়া পড়া যাবে?
নামাজের ভেতরে যেসব কাজ ফরজ তার একটি হলো- নামাজে বৈঠকে বসা। আর বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু বা তাশাহহুদ পড়া ওয়াজিব বা আবশ্যক। প্রতি দুই দুই রাকাত পর পর বৈঠকে বসতে হয়। প্রথম বৈঠকে শুধু তাশাহুদ পড়ার নিয়ম। দ্বিতীয় ও শেষ বৈঠকে দুরুদ শরীফ ও দোয়ায়ে মাসুরা পড়া সুন্নাত।
দোয়া মাসুরা অর্থ কোরআন বা হাদিসে রয়েছে এমন কোনো দোয়া। ফরজ বা নফল নামাজের শেষ বৈঠকে দরুদ পড়ার পর কোরআন-হাদিসে বর্ণিত রয়েছে এমন কোনো দোয়া পড়া মুস্তাহাব। প্রচলিত দোয়ায়ে মাসুরা ছাড়া কোরআন হাদিসে বর্ণিত অন্য কোনো দোয়াও চাইলে পড়া যাবে। এমনকি একাধিক দোয়াও পড়া যায়। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে—
ثُمَّ يَتَخَيَّرُ مِنَ الْمَسْأَلَةِ مَا شَاءَ
এরপর (দরুদ পাঠের পর) যে দোয়া ইচ্ছা পড়বে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪০২)
তবে এক্ষেত্রে সেই দোয়াগুলো পড়া উত্তম হবে, যেগুলো রাসূলুল্লাহ সা. সরাসরি বলেছেন। হাদিসে বর্ণিত এমন কয়েকটি দোয়া হলো—
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ নামাজে তাশাহহুদ পড়বে, তখন চারটি বিষয় থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করবে। বলবে–
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি জাহান্নামের আজাব থেকে, কবরের আজাব থেকে, জীবন-মৃত্যুর ফিতনা থেকে এবং মাসীহ দাজ্জালের অনিষ্ট থেকে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৮৮)
অপর বর্ণনায় এসেছে, উরওয়া ইবনু যুবাইর রহ. থেকে বর্ণিত যে, নবী সা.-এর সহধর্মিনী আয়িশা রা. তাঁকে বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সা. এ বলে দোয়া করতেন–
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَفِتْنَةِ الْمَمَاتِ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি কবরের আজাব থেকে, দাজ্জালের ফিৎনা থেকে। আশ্রয় প্রার্থনা করছি জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে। হে আল্লাহ ! আমি আশ্রয় চাচ্ছি গুনাহ ও ঋণ থেকে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৩৩ সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৮৯)
আমাদের মাঝে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ যে দোয়া তা আবু বকর রা.-এর আবেদনের প্রেক্ষিতে রাসূলুল্লাহ সা. তাঁকে শিখিয়েছেন।
হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত আবু বকর রা. রাসূলুল্লাহ সা. -এর কাছে আবেদন করলেন, আমাকে একটি দোয়া শিখিয়ে দিন, যা আমি নামাযে পড়ব। রাসূলুল্লাহ সা. বললেন, এ দোয়াটি বলবে–
اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا وَلا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلا أَنْتَ فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي إِنَّك أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
অর্থ: হে আল্লাহ্! আমি নিজের উপর অধিক জুলুম করেছি। আপনি ছাড়া সে অপরাধ ক্ষমা করার কেউ নেই। আপনার পক্ষ থেকে আমাকে তা ক্ষমা করে দিন এবং আমার উপর রহমত বর্ষণ করুন। নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল ও দয়াবান। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৩৪ সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৭০৫)
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More