মা-বাবার হক আদায়ে সন্তানের যা করণীয়
মা-বাবার হক আদায়ে সন্তানের যা করণীয়
সন্তান মা-বাবার অস্তিত্বের অংশ। নিজের অস্তিত্বের অংশের প্রতি মা-বাবার স্নেহ-মমতা প্রাকৃতিক। সন্তানের জন্য তারা শত, সহস্র দুঃখ, কষ্ট সহ্য করতে প্রস্তুত। জন্মের পর থেকে সন্তানকে পরিণত করে তোলার পেছনে মা-বাবা যেই পরিমাণ কষ্ট স্বীকার করেন সন্তানের পক্ষে কোনোভাবেই এর প্রতিদান দেওয়া সম্ভব নয়।
প্রতিদান দেওয়া সম্ভব না হলেও তাদের অনুগত থাকা, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা সন্তানের একান্ত কর্তব্য। তাদের সন্তুষ্টিই একজন সন্তানের জান্নাত-জাহান্নাম লাভের উপায়।
সন্তান যদি মা-বাবার খেদমত করে তাদের সন্তুষ্ট করতে পারে এর বিনিময়ে তার জান্নাত লাভ হয়। বিপরীতে যদি তাদের নানাভাবে কষ্ট দেয় কিংবা তাদের অবাধ্য হয়, তা হলে এর ফলে জাহান্নামে যেতে হবে। এ ব্যাপারে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবু উমামা রা. সূত্রে বর্ণিত, ‘এক লোক রাসুলুল্লাহ সা.-কে জিজ্ঞাসা করল, সন্তানের ওপর মা-বাবার কী হক? রাসুলুল্লাহ সা. বললেন, মা-বাবা হয়তো তোমার জন্য জান্নাত কিংবা জাহান্নাম’ (ইবনে মাজা : ৩৬৬২)।
তাই মা-বাবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার ও তাঁদের সেবার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। হজরত আবু হুরায়রা রা. সূত্র বর্ণিত—
এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সা.-এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল, ‘মানুষের মধ্যে আমার সদ্ব্যবহার পাওয়ার সর্বাপেক্ষা হকদার কে? তিনি বললেন, তোমার মা, সে আবার জিজ্ঞাসা করল, অতঃপর কে? রাসুল সা. বললেন, তোমার মা, এরপর তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, অতঃপর কে? রাসুল সা. বললেন তোমার মা।
তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, এরপর কে? রাসুলুল্লাহ সা. বললেন, তোমার বাবা’ (মুসলিম : ৬৩৯৪)। এখানে রাসুল সা. মা-বাবার মধ্যেও সর্বাগ্রে রেখেছেন মায়ের হক।
মা-বাবার হক আদায়ে সন্তানের কয়েকটি করণীয় এখানে তুলে ধরা হলো।
জীবিত মা-বাবার হক আদায়ে সন্তানের করণীয়—
১. মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা।
২. তাদের প্রতি মুহাব্বত ও ভালোবাসা রাখা।
৩. তাদের অনুগত হওয়া।
৪. তাদের সেবা-যত্ন করা।
৫. তাদের প্রয়োজন পূরণ করা।
৬. তাদের আরাম-আয়েশের প্রতি খেয়াল রাখা।
৭. সন্তানের কাছ থেকে মা-বাবা দূরে থাকলে মাঝে মাঝে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া।
মা-বাবা মারা গেলে তাদের জন্য সন্তানের সাতটি হক আছে—
১. মা-বাবার জন্য মাগফিরাতের দোয়া করা।
২. নেক কাজ করে তাদের রুহের জন্য সওয়াব পাঠানো।
৩. মা-বাবা আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সম্মান করা।
৪. তাদের বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনদের সাহায্য-সহযোগিতা করা।
৫. তাদের ঋন বা আমানত পরিশোধ করা।
৬. তাদের বৈধ অসিয়ত পূরণ করা।
৭. মাঝেমধ্যে তাদের কবর জিয়ারত করা।
(সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত : ২৩, সূরা লোকমান, আয়াত : ১৪, মিশকাত শরীফ, ৪১৮)
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More