Main Menu

পাপের প্রতি আগ্রহ তৈরি হলে যেভাবে বিরত থাকবেন

পাপের প্রতি আগ্রহ তৈরি হলে যেভাবে বিরত থাকবেন

পাপ মানুষকে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত করে। জান্নাত থেকে দূরে সরিয়ে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। মানুষের নফস মানুষকে পাপাচারের দিকে ধাবিত করে।

 

একবার সশস্ত্র যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তনকালে নবী করিম (সা.) সাহাবায়ে কিরামকে বললেন: দেখো, আমরা ছোট যুদ্ধ থেকে বড় যুদ্ধের দিকে প্রত্যাবর্তন করছি। রাসুলুল্লাহ (সা.) ছোট যুদ্ধ বলতে বুঝিয়েছেন তলোয়ার, বল্লম, তির ইত্যাদি অর্থাৎ সশস্ত্রযুদ্ধকে, যে যুদ্ধে মারামারি ও খুনোখুনি হয় আর বড় যুদ্ধ বা ‘জিহাদুল আকবর’ বলতে নফসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাকে বুঝিয়েছেন। তাই নফসের সঙ্গে যুদ্ধকে ‘জিহাদুল আকবর’ বা বড় যুদ্ধ বলা হয়।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে ব্যক্তি স্বীয় প্রতিপালকের সম্মুখে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে এবং প্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বিরত রাখে; জান্নাতই হবে তার আবাস।’ (সূরা আন-নাজিয়াত, আয়াত: ৪০-৪১)

 

হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলে করিম (সা.) বলেছেন, জাহান্নামকে ঘিরে রাখা হয়েছে আকর্ষণীয় কাজকর্ম দিয়ে আর জান্নাতকে ঘিরে রাখা হয়েছে নিরস কাজকর্ম দিয়ে। (বোখারি, খণ্ড ৭, ২৪৫৫)

নফসের ধোঁকায় না পড়ে পাপ থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করা উচিত প্রত্যেকের। মন কখনো পাপ করতে আগ্রহী হয়ে উঠলে কিছু উপায় অবলম্বন করে পাপাচারে লিপ্ত হওয়া থেকে বাঁচা যেতে পারে।

পাপকে ছোট বা তুচ্ছ জ্ঞান না করা

পাপ যেমনই হোক, তা পাপই। তাকে ছোট মনে করে তা করে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রতিটি পাপই আমলনামায় লেখা হয়। সুতরাং পরকালীন শাস্তির কথা ভেবে ক্ষুদ্র পাপ থেকেও বিরত থাকা উচিত।

রাসুল (সা.) আয়েশা (রা.)-কে বলেছেন, ‘হে আয়েশা! তুমি ছোট ছোট গুনাহ থেকেও নিজেকে রক্ষা করো। কেননা সেটা লেখার জন্যও আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত আছেন।’ (মিশকাত, হাদিস : ৫৩৫৬)

ভালো মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন

মানুষের পাপ কাজে অসৎ সঙ্গীদের সহায়তা ও প্রভাব থাকে। তাই পাপ থেকে বেঁচে থাকতে সৎ ও ভালো মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা উচিত। মহানবী (সা.) ভালো মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে বলেছেন। তিনি বলেন, ‘তুমি মুমিন ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারো সঙ্গী হবে না এবং তোমার খাদ্য যেন পরহেজগার লোকে খায়।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৩২)

পাপ প্রকাশ না করা

যেকোনো পাপ আল্লাহর অবাধ্যতার শামিল। পরম ক্ষমাশীল আল্লাহ তাআলা বান্দার পাপ গোপন রেখে তা ক্ষমা করে দিতে পারেন। কিন্তু বান্দা নিজে তা প্রকাশ করলে ওই বান্দাকে আল্লাহ ক্ষমা করেন না।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমার সব উম্মতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী এর ব্যতিক্রম। আর নিশ্চয়ই এটা বড়ই অন্যায় যে কোনো লোক রাতের বেলা অপরাধ করল, যা আল্লাহ গোপন রেখেছেন। কিন্তু সে সকালে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল যে আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার ওপর আল্লাহর দেওয়া আবরণ খুলে ফেলল।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০৬৯)

অনুশোচনা ও নেক কাজ

শয়তানের প্ররোচনায় পাপ হয়ে গেলে অনুশোচনার পরপরই কোনো নেকির কাজ করা উচিত। কারণ নেকি পাপ মুছে দেয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই সৎ কর্মসমূহ মন্দ কর্মসমূহকে বিদূরিত করে।’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ১১৪)

তাওবা-ইস্তিগফারের অভ্যাস গড়ে তোলা

শয়তানের প্ররোচনায় যতবার পাপ হবে, ততবারই তাওবা করা উচিত। কারণ শয়তান চায় না কোনো বান্দা ক্ষমা পেয়ে যাক। তাই পাপ থেকে মুক্ত থাকার জন্য বারবার তাওবা করার অভ্যাস করে নিতে হবে।

হাদিসে কুদসিতে আছে, ‘হে আদম সন্তান! তোমার গুনাহর পরিমাণ যদি আসমানের কিনারা বা মেঘমালা পর্যন্তও পৌঁছে যায়, তারপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব, এতে আমি পরোয়া করব না। হে আদম সন্তান! তুমি যদি সম্পূর্ণ পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়েও আমার কাছে আসো এবং আমার সঙ্গে কাউকে অংশীদার না করে থাকো, তাহলে তোমার কাছে আমি পৃথিবীপূর্ণ ক্ষমা নিয়ে হাজির হব।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৪০)






Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *