হজের সুন্নত কাজগুলো কী কী?
হজের সুন্নত কাজগুলো কী কী?
হজের মাধ্যমে একজন মানুষ নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যান। আল্লাহর রাসূল সা. হাদিসে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ করে এবং অশ্লীল ও গুনাহর কাজ থেকে বেঁচে থাকে, সে নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। আর মকবুল হজের পুরস্কার জান্নাত ছাড়া অন্য কিছুই নয়।’ (বুখারি, ০১/২০৬)
অপর হাদিসে আল্লাহর রাসূল সা. বলেন, ‘তোমরা হজ-ওমরা সঙ্গে সঙ্গে করো। কেননা, এ দুটি দারিদ্র্য ও গুনাহ এভাবে দূর করে, যেভাবে হাঁপর লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা দূর করে। আর মকবুল হজের বিনিময় জান্নাত।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৮৮৭)
সামর্থ থাকার পরও হজ না করার পরিণাম ভয়াবহ। ফরজ হজ ত্যাগ করলে ইহুদি-নাসারার মতো মৃত্যু হবে বলে হাদিসে সতর্ক করা হয়েছে। ওমর ইবনুল খাত্তাব রা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি হজ করার সামর্থ্য রাখে, তবুও হজ করে না, সে ইহুদি হয়ে মৃত্যুবরণ করল কি খ্রিস্টান হয়ে, তার কোনো পরোয়া আল্লাহর নেই।’ (ইবনে কাসির : ১/৫৭৮)
হজ পালনের জন্য ৮ জিলহজ থেকে শুরু করে ১২ জিলহজ পর্যন্ত বেশ কিছু আমল করতে হয়, যার কিছু সুন্নত, কিছু ওয়াজিব এবং কিছু ফরজ।
এখানে হজের কিছু সুন্নত আমল তুলে ধরা হলো—
১. ইহরাম বাঁধার সময় গোসল বা অজু করা এবং শরীরে সুগন্ধি মাখা। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৬০, মুসলিম ৮/১০১)
২. নতুন বা পরিষ্কার চাদর পরা। সাদা হওয়া উত্তম (তিরমিজি, হাদিস : ৯১৫, ২৭২৩)
৩. ইহরাম বাঁধার আগে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করা। (মুসলিম, হাদিস : ২০৩১)
৪. বেশি বেশি তালবিয়া পড়া। (মুসলিম, হাদিস : ২২৪৬)
৫. মক্কাবাসী ছাড়া অন্যরা হজে ইফরাদ বা কিরান করাকালীন তাওয়াফে কুদুম করা। (মুসলিম, হাদিস : ২১৩৯)
৬. মক্কায় থাকাকালীন বেশি বেশি তাওয়াফ করা। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৯৪)
৭. ‘ইজতিবা’ করা। অর্থাৎ তাওয়াফ আরম্ভ করার আগে চাদরের এক দিককে নিজের ডান বাহুর নিচে রাখা এবং অপর দিককে বাম কাঁধের ওপর পেঁচিয়ে দেওয়া। (তিরমিজি ৭৮৭)
৮. তাওয়াফের সময় ‘রমল’ করা। রমলের পদ্ধতি হলো তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করের সময় ঘনঘন কদম ফেলা এবং উভয় কাঁধ হেলাতে হেলাতে চলা। (বুখারি, হাদিস : ১৫০১)।
উল্লেখ্য, ‘রমল’ ও ‘ইজতিবা’ ওই তাওয়াফে সুন্নত, যে তাওয়াফের পর সাঈ করা হয়।
৯. সাঈ করার সময় উভয় মিলাইনে আখজারাইনের (সবুজ বাতি) মধ্যখানে জোরে হাঁটা (পুরুষদের জন্য)। (মুসলিম, হাদিস : ২১৩৭)
১০. তাওয়াফের প্রত্যেক চক্করে হাজরে আসওয়াদে চুমু দেওয়া। চুমু দেওয়া সম্ভব না হলে হাজরে আসওয়াদের দিকে হাত উঁচিয়ে ইশারা করে হাতে চুমু দেওয়া। (আবু দাউ, হাদিস : ১৬০০, বুখারি, হাদিস : ১৫০৬, ১৫০৭)
১১. কোরবানির দিনসমূহে মিনায় রাত যাপন করা। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৬৮৩)
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More