কারো সঙ্গে ঝগড়া হলে কী করবেন?
কারো সঙ্গে ঝগড়া হলে কী করবেন?
কারো সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হওয়া অপছন্দনীয় কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। ইসলাম কখনো ঝগড়া-বিবাদকে সমর্থন করে না, বরং সবার সঙ্গে সৌহার্দ্য ও ভালোবাসাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ইসলামে।
সমাজিকভাবেও এই মন্দ স্বভাবটি মানুষ অপছন্দ করে। ঝগড়াটে স্বভাবের মানুষকে কেউ তেমন পছন্দ করে না। এমন লোকদের সবাই এড়িয়ে চলতে চায়। ঝগড়া বিবাদের কারণে মানুষ আল্লাহর রহমত থেকেও বঞ্চিত হয়।
আল্লাহ তায়ালা শবেকদরের মতো মহান রাতের সুনির্দিষ্ট সময়ের বিষয়টি শুধু বিতর্ক বা বিবাদের কারণে তুলে নেন। (বুখারি, হাদিস : ৪৯)
এতে বোঝা যায়, বিবাদ কল্যাণ থেকে বঞ্চিত করে।
ঝগড়া বা বিতর্ককারী আল্লাহ ও রাসূল সা.-এর কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত ব্যক্তি। রাসূল সা. বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে সেই লোক সবচেয়ে ঘৃণিত, যে অতি ঝগড়াটে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৪৫৭)
অগত্যা কারো সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে গেলে উত্তম পন্থায় তার জবাব দিতে হবে, যেন এতে কোনো ক্ষতি না হয়, মানসিকভাবে কেউ যেন আঘাত না পায়, কাউকে খাটো করা না হয় বা তাদের প্রতি ঠাট্টা-বিদ্রুপ প্রকাশ না পায়।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহ্বান করো প্রজ্ঞা ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে এবং তাদের সঙ্গে বিতর্ক করো উত্তম পন্থায়। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক ভালোভাবেই জানেন কে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনি ভালোভাবেই জানেন কে সুপথপ্রাপ্ত হয়েছে।’ (সূরা নাহল, আয়াত : ১২৫)
অপর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘(হে নবি,) আপনি ক্ষমাপরায়ণতা অবলম্বন করুন, (মানুষকে) সৎকাজের আদেশ দিন এবং অজ্ঞদের এড়িয়ে চলুন।’ (সূরা আরাফ, আয়াত : ১৯৯)
তর্ক এড়িয়ে চলার মধ্যে কল্যাণ আছে। নবীজি সা. তর্ক পরিহারকারীর জন্য সুসংবাদ ঘোষণা করেছেন।
হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহ আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অন্যায়ের পক্ষে তর্ক করে না, তার জন্য জান্নাতের এক পার্শ্বে একটি ঘর তৈরি করা হয়। আর যে ব্যক্তি ন্যয়ের পক্ষে থেকেও তর্ক পরিহার করে তার জন্য জান্নাতের মধ্যস্থলে একটি ঘর তৈরি করা হয়। আর যে ব্যক্তি তার চরিত্রকে সুন্দর করে তার জন্য জান্নাতের উপরের অংশে একটি ঘর নির্মাণ করা হয়।’ (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, বয়হাকি)
আরেক হাদিসে হজরত মুআজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমি ওই ব্যক্তির জন্য জান্নাতের পাশ্বদেশে একটি, জান্নাতের মধ্যভাগে একটি এবং জান্নাতের উপরিভাগে আরও একটি ঘরের জামিন হচ্ছি। যে ব্যক্তি সত্যাশ্রয়ী হওয়া সত্বেও তর্ক পরিহার করে, উপহাসের ছলে হলেও মিথ্যা কথা বর্জন করে, আর নিজের চরিত্রকে সুন্দর করে।’ (মুসনাদে বাযযার, তারগিব)
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More