অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ দখল করার শাস্তি
অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ দখল করার শাস্তি
মানুষের জীবনযাপনের জন্য অর্থ-সম্পদ, সহায়-সম্পত্তির প্রয়োজন হয়। ইসলাম জীবনোপকরনের প্রয়োজনীয় সবকিছু উপার্জনের প্রতি উৎসাহী করেছে। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
‘অতপর নামাজ শেষ হলে তোমরা জমিনে (পৃথিবীতে) ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা (জীবিকা উপার্জনে) সফলকাম হও।’ (সূরা জুমা, আয়াত : ১০)
জীবিকা উপার্জনের ক্ষেত্রে হালাল-হারামে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে ইসলামি শরীয়তে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘হে রাসুলগণ! আপনারা পবিত্র বস্তু ভক্ষণ করুন এবং নেক কাজ করুন।’ (সূরা মুমিনুন, আয়াত : ৫১)।
ইসলাম অন্যের জিনিস আত্মসাৎ করাকে গর্হিত অপরাধ বলে গণ্য করেছে। কোনো প্রকৃত ধার্মিক ও রুচিশীল ভদ্র মানুষ এমন করতে পারে না। যে যা আত্মসাৎ করবে, তা নিয়ে বিচারের মাঠে উপস্থিত হবে।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘কোনো নবীর জন্য শোভনীয় নয় যে তিনি খিয়ানত করবেন। আর যে ব্যক্তি খিয়ানত করবে সে কিয়ামতের দিন সেই খিয়ানত করা বস্তু নিয়ে উপস্থিত হবে। অতঃপর প্রত্যেকেই পরিপূর্ণভাবে পাবে যা সে অর্জন করেছে। আর তাদের প্রতি কোনো অন্যায় করা হবে না।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৬১)
আল্লাহ আরও বলেন, ‘আর তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ো না।’ (সূরা বাকারা, আয়াত : ১৮৮)
হাদিস শরিফে এসেছে, আদি ইবন আমিরা আল-কিন্দি রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘আমি যাকে তোমাদের কোনো কাজের দায়িত্বশীল করি, অতঃপর সে সুচ পরিমাণ বস্তু বা তার চেয়ে বেশি সম্পদ আত্মসাৎ করল, সেটাই হবে খিয়ানত। কিয়ামতের দিন সেই বস্তু নিয়ে সে উপস্থিত হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৮৩৩)
অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে দখলকারী ব্যক্তির শাস্তি সম্পর্কে এক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমরা কি জান, নিঃস্ব কে?’ সাহাবিরা বললেন, ‘যার কাছে কোনো দিনার-দিরহাম এবং কোনো আসবাব-পত্র নেই সেই তো নিঃস্ব।’
তিনি বললেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে (প্রকৃত) নিঃস্ব তো সেই ব্যক্তি, যে কিয়ামতের দিন নামাজ, রোজা, জাকাতের (নেকি) নিয়ে উপস্থিত হবে। এ সময় তার অবস্থা এমনও থাকবে যে, সে দুনিয়াতে কাউকে গাল দিয়েছে। কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করেছে, অবৈধ উপায়ে কারো সম্পদ ভোগ করেছে। কাউকে হত্যা করেছে এবং কাউকে মেরেছে। তখন তার সব নেকি এই অত্যাচারিত ব্যক্তিদের দিয়ে দেওয়া হবে।
এরপরও যদি পাওনাদারের হক তার নেক আমল থেকে পূরণ করা না যায়, তাহলে সে ঋণের পরিবর্তে তাদের পাপের একাংশ তাকে দিয়ে দেওয়া হবে। এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬৪৭৩)
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More