সুন্নত নামাজ ঘরে পড়া নিয়ে হাদিসে যা বলা হয়েছে
সুন্নত নামাজ ঘরে পড়া নিয়ে হাদিসে যা বলা হয়েছে
প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের আগে-পরে ১২ রাকাত সুন্নত নামাজ রয়েছে, যার গুরুত্ব অপরিসীম। শরীয়তের পরিভাষায় সুন্নত বলা হয়, ওই আদেশমূলক বিধানকে, যা ফরজ-ওয়াজিবের মতো অপরিহার্য না হলেও রাসূলুল্লাহ সা.-এর নিয়মিত আমল থেকে তা প্রমাণিত।
প্রতিদিন ফরজের আগে ও পরের সুন্নতগুলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবসময় আদায় করতেন, কখনও কোনও বিশেষ কারণ ছাড়া তা আদায় করা থেকে বিরত থাকতেন না এবং সাহাবায়ে কেরামকে আদায়ের নির্দেশ দিতেন।
উম্মে হাবিবা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতে ও দিনে ১২ রাকাত নামাজ আদায় করলো, জান্নাতে তার জন্য একটি ঘড় নির্মাণ করা হলো। সেগুলো হলো জোহরের (ফরজ নামাজের) পূর্বে চার রাকাত, পরে দুই রাকাত, মাগরিবের পর দুই রাকাত, ইশার পর দুই রাকাত, ফজর নামাজের পূর্বে দুই রাকাত। (তিরমিজি, কিতাবুস সালাত, ১/ ৪৪০,৪৪৫)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরজ নামাজ জামাতে আদায়ে গুরুত্ব দিয়েছেন এবং সুন্নত নামাজ ঘরে পড়তে বলেছেন। যেন শিশুরা বড়দের দেখে শৈশব থেকেই নামাজের প্রতি আকৃষ্ট হয়। এক হাদিসে রাসূল সা. বলেছেন—
‘তোমাদের ঘরেও তোমরা কিছু নামাজ আদায় করো, নামাজ না পড়ে ঘরকে কবরে পরিণত করো না।’ (বুখারি : ৪৩২, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)
এ কারণে ফজরের সুন্নতসহ সকল সুন্নত ও নফল নামাজ ঘরে আদায় করা উত্তম। রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, … তোমরা ঘরে নামাজ আদায় কর। কেননা ফরজ নামাজ ছাড়া অন্যান্য নামাজ ঘরে আদায় করাই উত্তম।(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭৮১)
রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সুন্নত সাধারণত ঘরেই আদায় করতেন।
আম্মাজান আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সুন্নত আদায় করে প্রয়োজন হলে আমার সাথে কথা বলতেন। অন্যথায় ফরজ আদায় করার জন্য মসজিদে চলে যেতেন। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ৪১৮)
অবশ্য সাহাবা ও তাবেঈন থেকে ফজরের সুন্নত মসজিদে আদায় করাও প্রমাণিত আছে। তাই মসজিদেও সুন্নত আদায় করা যাবে।
এক বর্ণনায় আছে, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. এমন সময় মসজিদে প্রবেশ করলেন যখন ইমাম নামাজ পড়াচ্ছিলেন। তিনি (প্রথমে) ফজরের দু’ রাকাত সুন্নত আদায় করলেন। (শরহু মাআনিল আছার ১/২৫৫)
আবু উসমান আনসারী রাহ. বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. মসজিদে এমন সময় এলেন যখন ইমাম ফজরের নামাজ পড়াচ্ছেন। আর তিনি তখনো ফজরের সুন্নত পড়েননি। তিনি প্রথমে পেছনে ফজরের সুন্নত আদায় করলেন। অতপর জামাতে শরিক হলেন। (শরহু মাআনিল আছার ১/২৫৬)
অন্য বর্ণনায় আছে, বিশিষ্ট তাবেয়ী সাঈদ ইবনে জুবায়ের রহ. মসজিদে এমন সময় এলেন যখন ইমাম ফজর নামায পড়াচ্ছেন। তিনি মসজিদের দরজার সামনে সুন্নত পড়লেন অতপর জামাতে শরিক হলেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৬৪৭৪; বাযলুল মাজহূদ ৬/৩৭২)
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More