একজন মুসলিম যে ৩ প্রতিজ্ঞায় নিজেকে বদলাতে পারেন
নিউজ ডেস্ক:
নতুন বছর মানুষকে অতীতের থেকে আরও ভালো কিছু করার, নতুন করে ভাবার অনুপ্রেরণা যোগায়। বছরের শুরুতে মানুষ নতুন কিছু করার স্বপ্ন দেখে। তবে মেপে মেপে মানুষের প্রতিটি স্বপ্ন পূরণ হয় না। কখনো স্বপ্নের থেকে আরও ভালো কিছুর দেখা মেলে আবার কখনো কখনো সঠিক পরিকল্পনা, দৃঢ় প্রতিজ্ঞা না থাকায় কোনো কিছুই হয় না, আগের থেকেও মন্দ কাটে একটি বছর।
তাই ফুরিয়ে যাওয়া দিনগুলোর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নতুন বছরে স্বপ্নপূরণ ও স্বপ্নের যথাযথ বাস্তবায়নে প্রয়োজন নিজের স্বপ্ন, পরিকল্পনা ও প্রতিজ্ঞার সঠিক মূল্যায়ন।এজন্য একজন মুমিন বছরের শুরুতেই তিনটি প্রতিজ্ঞা করতে পারেন।
আমলের প্রতিজ্ঞা
আল্লাহ তায়ালা মানব জাতিকে সব থেকে সুন্দর আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন। যাপিত জীবনে মানুষ পাপ-পুণ্য সব ধরনের কাজ করে থাকে, তবে মানুষ যেহেতু জন্মগতভাবে গুনাহ প্রবণ তাই শয়তানের ধোঁকা, নফসের প্ররোচনা ও পরিবেশের তাড়নায় বিভিন্ন গুনাহে জড়িয়ে পড়ে। একটি বছরের বিদায় ও আরেকটি নতুন বছরের সূচনাকালে গত বছরের আমল-আখলাক, ইবাদত-বন্দেগীর ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করে আরও ভালো কিছু করতে প্রতিজ্ঞা করা উচিত একজন মুসলিমের।
পবিত্র কোরআন ইরশাদ হয়েছে, ‘যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য যে, কর্মে তোমাদের মধ্যে কে উত্তম। তিনিই পরিপূর্ণ ক্ষমতার মালিক, অতি ক্ষমাশীল।’(সূরা মুলক, আয়াত, ২)
দুনিয়ার জীবনে যে যতটুকু পরিমাণ আমল করবে, তার সওয়াব পরিপূর্ণ আকারে লাভ করবে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘কেউ অণু পরিমাণ নেক আমল করলে তা দেখবে, এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎ আমল করলে তাও দেখতে পাবে।’(সূরা যিলযাল, আয়াত, ৭-৮)
এ ব্যাপারে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচো-তা এক টুকরা খেজুর দান করার বা একটি ভালো কথা বলার বিনিময়েই হোক না কেন’। (বুখারি, হাদিস, ৬৫৪০)
গুনাহ মুমিনের জীবনে ক্ষতের মতো। শরীরের ক্ষত নিয়ে যেমন সুন্দর ও শান্তিময় জীবন-যাপন করা যায় না, একিভাবে গুনাহের ক্ষত নিয়ে মুমিন স্বস্তি, শান্তিতে জীবনযাপন করতে পারে না; তাই বছরের সূচনাকালে মুমিনের গুনাহ মুক্ত জীবন-যাপনের প্রতিজ্ঞা করা উচিত। আর এর জন্য সুন্দর পদ্ধতি হলো, গুনাহ হওয়ার সাথে সাথে আল্লাহ তায়ালার কাছে খাঁটি দিলে তওবা করা।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তবে যারা তওবা করবে, নিজেদেরকে সংশোধন করে ফেলবে, আল্লাহর আশ্রয়কে শক্তভাবে ধরে রাখবে এবং নিজেদের দ্বীনকে আল্লাহর জন্য খালেস করে নেবে, তারা মুমিনদের সঙ্গে শামিল হয়ে যাবে। আল্লাহ অবশ্যই মুমিনদেরকে মহা প্রতিদান দান করবেন।’(সূরা নিসা, আয়াত, ১৪৬)
জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সচেতনতা
আল্লাহ তায়ালা মানুষকে অহেতুক ও উদ্দেশ্যহীন সৃষ্টি করেননি। বরং তিনি বিশেষ উদ্দেশ্যে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এবং। তাই প্রত্যেক মুমিন-মুসলমানের উচিত সেই উদ্দেশ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং তা সামনে রেখে নিজের জীবনযাপন করা।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবিদের এই উদ্দেশ্যপূর্ণ জীবনযাপনের শিক্ষা দিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তবে কি তোমরা মনে করেছিলে যে আমি তোমাদের অহেতুক সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের আমার কাছে ফিরিয়ে আনা হবে না?’ (সূরা মুমিনুন, আয়াত, ১১৫)
লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া কাশেফুল উলূম মাদ্রাসা, মধুপুর, টাঙ্গাইল
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More