জান্নাতিদের যে বিশেষ দানে সন্তুষ্ট করবেন আল্লাহ
হাদিসে মানুষের পৃথিবীর জীবনকের মুসাফিরের জীবন বলা হয়েছে। মুসাফির যেমন ভ্রমণ শেষ তার নিজের বাড়িতেই ফিরে যায়, ঠিক তেমনি মানুষকে পৃথিবীর জীবন শেষ তার আসল বাড়ি জান্নাতে ফিরতে হবে। আর দুনিয়াতে কেউ যদি শয়তানের ধোকায় পড়ে বিপথে যায় তাহলে তাকে চিরস্থায়ী শাস্তির জীবন জাহান্নামে বসবাস করতে হবে।
মানুষের দুনিয়ার জীবন সম্পর্কে এক হাদিসে হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একদিন) আমার দুই কাঁধ ধরে বললেন, তুমি এ দুনিয়াতে একজন মুসাফির অথবা পথচারীর মত থাক।’
ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলতেন, তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হলে আর ভোরের অপেক্ষা করো না এবং ভোরে উপনীত হলে সন্ধ্যার অপেক্ষা করো না। তোমার সুস্থতার অবস্থায় তোমার পীড়িত অবস্থার জন্য কিছু সঞ্চয় কর এবং জীবিত অবস্থায় তোমার মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ কর। (বুখারি ৬৪১৬, তিরমিজি, হাদিস, ২৩৩৩, ইবন মাজাহ, হাদিস, ৪১১৪, আহমদ, হাদিস, ৪৭৫০, ৪৯৮২, ৬১২১)
পরকালে চিরস্থায়ী জান্নাত কারা পাবেন- এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদেরকে শুভ সংবাদ দিন যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। যখনই তাদেরকে ফলমূল খেতে দেয়া হবে তখনই তারা বলবে, আমাদেরকে – পূর্বে জীবিকা হিসেবে যা দেয়া হত এতো তাই’। আর তাদেরকে তা দেয়া হবে সাদৃশ্যপূর্ণ করেই এবং সেখানে তাদের জন্য রয়েছে পবিত্র সঙ্গিনী। আর তারা সেখানে স্থায়ী হবে।’ (সূরা বাকারা, আয়াত, ২৫)
চিরস্থায়ী জান্নাতে মানুষের জন্য কল্পনাতীত নেয়ামত রাখা হয়েছে। এ সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি আমার নেক বান্দাদের জন্য এমন বস্তু তৈরি করে রেখেছি যা কোন চোখ কখনো দেখেনি, কোন কান কখনো শুনেনি এবং কোন অন্তর যা কখনো চিন্তাও করেনি। এসব নেয়ামত আমি জমা রেখে দিয়েছি। তবে আল্লাহ তোমাদেরকে যা অবগত করিয়েছেন…। (মুসলিম শরিফ, ৬৮৭২)
জান্নাতে মানুষের সব আশা পূরণ হবে। সেখানে মানুষ আল্লাহ তায়ালার দর্শন লাভে ধন্য হবে। আল্লাহ তায়ালা জান্নাতিদের ওপর সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন এবং তাদের কাছে নিজেই জানতে চাইবেন তারা চিরস্থায়ী জান্নাত পেয়ে কতটা আনন্দিত।
এ বিষয়ে এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা জান্নাতিদেরকে উদ্দেশ্য করে বলবেন, হে জান্নাতীগণ! তখন তারা জওয়াব দেবে, হে আমাদের রব! আমরা উপস্থিত এবং আপনার আনুগত্যের জন্যে প্রস্তুত। সমস্ত কল্যাণ আপনারই হাতে। এরপর আল্লাহ তায়ালা বলবেন, তোমরা কি সন্তুষ্ট? তারা জওয়াব দেবে, হে আমাদের রব! এখনও সন্তুষ্ট না হওয়ার কি সম্ভাবনা? আপনি তো আমাদেরকে এত সব দিয়েছেন, যা অন্য কোন সৃষ্টি পায়নি।
আল্লাহ বলবেন, আমি তোমাদেরকে আরও উত্তম নেয়ামত দিচ্ছি। আমি তোমাদের প্রতি আমার সস্তুষ্টি নাজিল করছি। এরপর কখনো তোমাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হব না।’ (বুখারি, হাদিস, ৬৫৪৯, ৭৫১৮, মুসলিম, হাদিস, ২৮২৯)
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More