Main Menu

লিবিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির লক্ষ্যে সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর

নিউজ ডেস্ক:
লিবিয়ায় জনশক্তি রপ্তানিতে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে। দেশটির রাজধানী ত্রিপলীতে ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ, এমপি এবং লিবিয়ার শ্রম ও পুনর্বাসন মন্ত্রী প্রকৌশলী আলী আবেদ রেজা এই স্মারক স্বাক্ষর করেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টাবর) প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামানের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

স্মারক স্বাক্ষরের সময় বাংলাদেশ থেকে আগত উচ্চ পর্যায়ের ডেলিগেশনের সদস্যবৃন্দ ও লিবিয়ায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার এবং লিবিয়ার শ্রম মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষরের মাধ্যমে লিবিয়ায় বৈধভাবে বাংলাদেশিদের নতুন নতুন কর্মসংস্থান সুযোগ প্রসারিত হবে। এটি লিবিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষা করবে এবং প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানো ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সমঝোতা স্মারকটি লিবিয়ায় অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এটি বাংলাদেশ ও লিবিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নত করবে এবং দুদেশের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ বন্ধনকে আরো শক্তিশালী করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এই সমঝোতার আওতায় লিবিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বিশেষ করে বেতন-ভাতা, কর্মকাল, আবাসন, খাদ্য, ছুটি ও সার্ভিস বেনিফিট ইত্যাদি উল্লেখ পূর্বক নিয়োগকর্তার সাথে একটি প্রাথমিক চুক্তি বাংলাদেশে স্বাক্ষরিত হবে। যার মাধ্যমে লিবিয়ায় আগত কর্মীরা দেশে থাকতেই তাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে অবহিত হতে পারবে। এছাড়াও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সর্বোত্তম তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ করা হবে এবং নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের লিবিয়া আসা ও মেয়াদ শেষে দেশে ফেরার খরচ নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি বহন করবে।

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পূর্বে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী লিবিয়ার শ্রম মন্ত্রীর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠকে লিবিয়ার শ্রম মন্ত্রী বলেন, এতদিন বাংলাদেশ থেকে লিবিয়ায় কর্মী নিয়োগের কোন সমঝোতা স্মারক কার্যকর না থাকায় বিভিন্ন মহল সুযোগ গ্রহণ করে আসছিল। ফলে বাংলাদেশি কর্মীরা বিভিন্ন প্রতারণার শিকার এবং জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছিল। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে একটি আইনী কাঠামো তৈরি হয়েছে; যার মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীদের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। একই সাথে লিবিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীরা সোশ্যাল সিকিউরিটি ও মেডিক্যাল ইন্সুরেন্সের আওতায় আসবে।

প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী জানান, লিবিয়ায় অবৈধভাবে বসবাসরত বিদেশী কর্মীদের নিয়মিত করণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশিদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী লিবিয়ার শ্রম মন্ত্রী কর্তৃক বিভিন্ন বিষয়ে উত্থাপিত প্রস্তাবনাকে স্বাগত জানান। তিনি লিবিয়ায় আগত কর্মীদের ভিসা সংগ্রহ থেকে শুরু করে যাবতীয় ব্যয় নিয়োগকর্তা বা কোম্পানী কর্তৃক বহন করার মাধ্যমে অভিবাসন খরচ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার জন্য লিবিয়ার শ্রম মন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। একইসাথে তিনি কর্মীদের সোশ্যাল সিকিউরিটি নিশ্চিতকরণ এবং মেডিক্যাল ইন্সুরেন্সের ব্যয় নিয়োগকর্তার কর্তৃক পরিশোধেরও অনুরোধ করেন।

মন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত পূর্ব অভিজ্ঞতার সনদ লিবিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতি প্রদানের অনুরোধ জানান। এছাড়াও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী লিবিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের বৈধতা অর্জনের প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণের জটিলতা নিরসনে শ্রম মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এতে লিবিয়ায় আনডকুমেন্টেট হয়ে আগত বাংলাদেশিসহ অন্যান্য বিদেশী কর্মীদের বৈধকরণের প্রক্রিয়া নির্ধারণ করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে শ্রম মন্ত্রী আশ্বস্ত করেন।

একই সঙ্গে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণের জটিলতা নিরসনে এই কমিটি কাজ করবে মর্মে তিনি অবহিত করেন।

উল্লেখ্য, প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী মহোদয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের একটি ডেলিগেশন দুইদিনের জন্য লিবিয়া সফর করছেন। এ প্রতিনিধিদলে আছেন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক সালেহ আহমদ মোজাফফর, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মীর খায়রুল আলম এবং মন্ত্রীর একান্ত সচিব (যুগ্মসচিব) আহমদ কবীর। সফরকালে মন্ত্রী ত্রিপলীতে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় তিনি লিবিয়ায় কর্মরত প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যাবলী সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *