Main Menu

মুনাফিকের স্বভাব সম্পর্কে কোরআনে যা বলা হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক:
যারা প্রকাশ্যে নিজেদেরকে মুমিন বলে পরিচয় দেয় কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মুমিন নয় তাদেরকে কোরআনের ভাষায় মুনাফিক বলা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে তাদের পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে এভাবে-

وَ مِنَ النَّاسِ مَنۡ یَّقُوۡلُ اٰمَنَّا بِاللّٰهِ وَ بِالۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَ مَا هُمۡ بِمُؤۡمِنِیۡنَ خٰدِعُوۡنَ اللّٰهَ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا ۚ وَ مَا یَخۡدَعُوۡنَ اِلَّاۤ اَنۡفُسَهُمۡ وَ مَا یَشۡعُرُوۡنَ ؕ

মানুষের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা বলে, ‘আমরা আল্লাহর প্রতি এবং আখেরাতের দিনের প্রতি ঈমান এনেছি’ কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা মুমিন নয়। তারা আল্লাহ ও মুমিনদেরকে প্রতারিত করে, আসলে তারা নিজেদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে প্রতারিত করে না, কিন্তু এটা তারা উপলব্ধি করতে পারে না। ( সূরা বাকারা, (২), আয়াত, ৮-৯)

কোরআনে মুনাফিকদের সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তারা ভেতর এক এবং বাহিরে আরেক রূপ দেখিয়ে ভাবে যে তাদের কপটতা সম্ভবত কেউ বুঝে না, অথচ তারা আত্মপ্রচঞ্চনায় ভোগে। কারণ আল্লাহ তায়ালা সবধরনের ধোঁকাবাজীর ঊর্ধ্বে। মুনাফিকরা তাদের ধোঁকার ক্ষতিকর পরিণতি দুনিয়া ও আখেরাতে পেয়ে থাকে।

যারা মুনাফিক, সত্যকে অবলম্বন করতে পারে না, তাদের অন্তর মূলত অসুস্থ বা রোগাক্রান্ত। তাই আল্লাহ তাদের রোগকে বাড়িয়ে দেন। রোগ বলতে সে অবস্থাকে বোঝায় যা মানুষকে স্বাভাবিক পরিস্থিতির বাইরে নিয়ে যায় এবং তাদের কাজ-কর্মে বিঘ্নতা বৃষ্টি করে। এবং এর শেষ পরিমাণ হয় ধ্বংস ও মৃত্যু।

হজরত জুনায়েদ বাগদাদী রহ. বলেন, যেভাবে অসতর্কতার কারণে মানুষের শরীরে রোগ সৃষ্টি হয়, ঠিক তেমনি প্রবৃত্তির অনুসরণের কারণে মানুষের অন্তরেও রোগ সৃষ্টি হয়।

মুনাফেকী মূলত দুই প্রকার।

১। বিশ্বাসগত মুনাফেকী৷

২৷ আমলগত (কার্যগত) মুনাফেকী।

বিশ্বাসগত মুনাফেকি ছয় প্রকার, এর যে কোন একটা কারো মধ্যে পাওয়া গেলে সে জাহান্নামের সর্বশেষ স্তরে নিক্ষিপ্ত হবে।

১. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা।
২. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা নিয়ে এসেছেন তার সামান্যতম অংশকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা।

৩. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ঘৃণা বা অপছন্দ করা।
৪. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা নিয়ে এসেছেন তার সামান্যতম অংশকে ঘৃণা বা অপছন্দ করা।

৫. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দ্বীনের অবনতিতে খুশী হওয়া।
৬. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দ্বীনের জয়ে অসন্তুষ্ট হওয়া।

আর কার্যগত বা আমলগত মুনাফেকি পাঁচ ভাবে হয়ে থাকে-

এর প্রমাণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদিস থেকে পাওয়া যায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুনাফিকের নিদর্শন হলো তিনটি, কথা বললে মিথ্যা বলে, ওয়াদা করলে ভঙ্গ করে, আমানত রাখলে খিয়ানত করে। (বুখারি, ৩৩, মুসলিম, ৫৯)

আরেকটি হাদিসে এসেছে, মুনাফিক ঝগড়া করলে অকথ্য গালি দেয়, চুক্তি করলে চুক্তি ভঙ্গ করে এবং চুক্তির বিপরীত কাজ করে। (মুসলিম, ৫৮, নাসায়ী, ৫০২০)

এ জাতীয় নিফাক বা মুনাফেকির কারণে মানুষ ঈমানহারা হয় না ঠিকই কিন্তু এ জাতীয় নিফাক আকীদাগত নিফাকের মাধ্যম। সুতরাং মুমিনের কর্তব্য হবে এ জাতীয় নিফাক হতে নিজেকে দূরে রাখা। (আল-ওয়াজিবাতুল মুতাহাত্তিমাত, তাফসীরে ইবনে কাসীর, তাফরিসে মাআরিফুল কোরআন, ১ম খণ্ড)






Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *