Main Menu

হাওরাঞ্চলের পর্যটনে চাঙা হচ্ছে সুনামগঞ্জের অর্থনীতি

নিউজ ডেস্ক:
পর্যটনে দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে হাওরের জেলা সুনামগঞ্জ। এরইমধ্যে জেলার টাঙ্গুয়ার হাওর, নিলাদ্রি লেক, যাদুকাটা নদীসহ বেশ কয়েকটি পর্যটনস্পট ভ্রমণপিপাসুদের নজর কেড়েছে। আর সেই সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। ফলে পর্যটনকে কেন্দ্র করে চাঙা হচ্ছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা সুনামগঞ্জের অর্থনীতি।

আঁকাবাঁকা নদী, হাওর, পাহাড় বিস্তৃত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুনামগঞ্জ। তিন হাজার ৭৪৭ বর্গকিলোমিটারের এই জেলায় প্রায় ২৫ লাখ মানুষের বসবাস। একসময় হাওরের অর্থনীতির চালিকাশক্তি ছিল ধান ও মাছ। বর্তমান সময়ে এই অঞ্চলের পর্যটন স্পটগুলো অর্থনীতিতে নতুন গতি এনেছে।

সুনামগঞ্জ জেলা সদর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলা। এই উপজেলায় অবস্থিত টাঙ্গুয়ার হাওর, লাউড়ের গড়, নীলাদ্রি লেক, শিমুল বাগান, স্বাধীনতা উপত্যকা, শাহ আরেফিনের মাজারসহ পর্যটক আকর্ষক নানা স্থান। যার সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন হাজারো পর্যটক। আর এতে কর্মসংস্থান হয়েছে হাওর এলাকার প্রায় ৩০ হাজার মানুষের।

টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ের বাসিন্দা মো. আবুল কালাম। গত পাঁচ বছর ধরে ছোট নৌকা নিয়ে হাওরে ঘুরতে আসা পর্যটকদের কাছে চা, বিস্কুট, চিপসসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করছেন। একসময়ে বেকার আবুল কালাম এখন মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করেন।

শুধু আবুল কালাম নয়, টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রায় ৩০টি ভাসমান ছোট নৌকায় করে পর্যটকদের কাছে বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে হাওর পড়ের শিশুরাও তাদের নৌকায় পর্যটকদের তুলে বিভিন্ন ধরনের গান শুনিয়ে টাকা রোজগার করছে। এমনকী ইঞ্জিনচালিত নৌকা, মোটরসাইকেল চালক, ব্যাটারিচালিত রিকশা, পর্যটকদের ঘোড়ায় চড়ানোসহ নানা কাজের সুযোগ হয়েছে হাওরপাড়ের মানুষদের।

এদিকে, টাঙ্গুয়ার হাওরে শতাধিক হাউস বোট চলে। যেখানে পর্যটকদের খাওয়া-দাওয়াসহ রাত্রীযাপনের সুবিধাও আছে। প্রতিটি হাউস বোট এক রাত দুই দিন সুনামগঞ্জের পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে দেখাতে ভাড়া নিচ্ছে এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা। এছাড়া স্থানীয় উদ্যোক্তাদের ২০০ থেকে ৩০০টি পর্যটকবাহী ট্রলারও হাওরে চলছে।

সেইসঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হওয়ায় প্রতিবছর হাওর এলাকায় পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, দেশের অন্যতম বৃহৎ জলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওরে ২০১৯ সালে পর্যটক আসে দুই লাখ। ২০২০ সালে করোনা মহামারি থাকায় পর্যটক কমে যায়। এরপরও লাখ খানেক পর্যটক আসে। ২০২১ সালে প্রায় সাড়ে তিন লাখ পর্যটক আসে। ২০২২ সালে পাঁচ লাখ ও চলতি বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ পর্যটক এরইমধ্যে হাওর এলাকার পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে দেখেছে। পর্যটকরা বলছেন, সুনামগঞ্জের পর্যটন স্পটগুলোর সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হলে বাণিজ্যিকভাবে এই জেলা অনেক লাভবান হবে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, সুনামগঞ্জে উড়াল সেতু নির্মাণ হওয়ার পর হাওর এলাকার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সহজেই মানুষ যেতে পারবে এবং হাওর এলাকার অর্থনীতি আরও চাঙা হবে। তবে যারাই সুনামগঞ্জে ঘুরতে আসবেন তারা যেন পরিবেশের দিকে খেয়াল রাখেন সে অনুরোধও জানান তিনি।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *