Main Menu

স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে কীভাবে ডাকবেন?

নাঈমুল হাসান তানযীম, অতিথি লেখক:
স্বামী-স্ত্রী একে অপরের অর্ধাঙ্গ। জীবন চলার সারথি। দুজনের ওপরই দুজনের কিছু হক রয়েছে। যা পালন করা আবশ্যক। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, তারা পরস্পর কীভাবে ডাকবে? এ বিষয়টির সমাধান ফিকহার বিভিন্ন কিতাবে রয়েছে।

এখানে স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের সম্বোধন বিষয়ে কিছু আলোচনা তুলে ধরা হলো-

>>স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের জন্য সুন্নত হলো, একে অপরের সঙ্গে উত্তম আচরণ করা, নরম ভাষায় কথা বলা…। (আল ফিকহুল ইসলামিয়্যু ওয়া আদিল্যাতুহু, ৭/৩৪২)

>> স্ত্রীর জন্য মাকরুহ হলো, স্বামীকে নাম ধরে ডাকা। বরং এমন শব্দে ডাকবে যা সম্মান ও মর্যাদা বোঝায়। যেমন, হে সরদার, ইত্যাদি। কারণ, স্ত্রীর ওপর স্বামীর হক বেশি।’ (রদ্দুল মুহতার , ৬/৪১৮)

>> বাবা এবং স্বামীকে নাম ধরে ডাকা মাকরুহ। (আল ফাতাওয়া আল হিনদিয়্যাহ, ০১/৩৬২,)

>>স্বামীকে নাম ধরে ডাকা অভদ্রতার পরিচায়ক। (আপ কে মাসায়েল অওর উন কা হল, ৬/৩৩৩)

অবশ্য স্বামী যদি এতে মনে কষ্ট না পায় বা নিজের সম্মানহানী মনে না করে— তাহলে নাম ধরে ডাকলে কোনো সমস্যা নেই।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, যখন আল্লাহর রাসুল ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম তার স্ত্রী হাজের এবং শিশু পুত্র ইসমাইলকে মক্কার জনমানবহীন প্রান্তরে রেখে চলে যাচ্ছিলেন— তখন পেছন থেকে তার স্ত্রী তাকে ডাকলেন এভাবে, ‘হে ইবরাহিম, তুমি আমাদের এমন জনমানবহীন উপত্যকায় রেখে কোথায় যাচ্ছ?’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৩৬৫)

এছাড়া বিভিন্ন দেশে স্বামীর নাম ধরে ডাকার প্রচলন রয়েছে। সুতরাং এ বিষয়ে সামাজিক নিয়ম-নীতি, সম্মান ও ভদ্রতার প্রতি লক্ষ্য রাখা জরুরি।

>> নাম ধরে ডাকা আদবের পরিপন্থি। এ জন্য ছেলে বাবাকে এবং স্ত্রী স্বামীকে নাম ছাড়া ডাকবে। ফকিহগণ নাম ধরে ডাকার বিষয়টিকে অপছন্দনীয় বলেছেন। তবে তাদের অনুপস্থিতিতে কারও সঙ্গে কথা বলার সময় নাম ধরে বলায় কোনো সমস্যা নেই।

>> স্বামী স্ত্রীকে নাম ধরে ডাকতে পারবে। এতে কোনো অসুবিধা নেই। কারণ, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ স্ত্রীদের নাম ধরে ডাকতেন। আর কাছে লোকজন থাকলে সন্তানের দিকে সম্পৃক্ত করে স্ত্রীকে ডাকতে কোনো অসুবিধা নেই।’ (কিতাবুল ফাতাওয়া, ৪/৪১০, ফাতাওয়া দারুল উলুম, ১৬/৪৯১)

সুতরাং বোঝা গেল, স্বামী-স্ত্রী পরস্পর সম্মানের সঙ্গে ডাকবে। এমন শব্দে ডাকবে না যাতে উভয়ের সম্মানহানি হয়। বিশেষ করে স্ত্রী স্বামীকে নাম ধরে ডাকা অনুচিত, অপছন্দনীয়।

শিক্ষার্থী: (ইফতা দ্বিতীয় বর্ষ) জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী, ঢাকা






Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *