আমলনামায় ভালো-মন্দ কাজের ফলাফল লেখা হয় যেভাবে
ধর্ম ডেস্ক:
মানুষ পাপ-পুণ্য সবধরনের কাজই করে। তবে নফসের ধোঁকায় পড়ে পাপেই লিপ্ত হয় বেশি। কারণ, পাপের কাজগুলো এমনভাবে সামনে উপস্থাপন করা হয়, যা মানুষ সহজেই পছন্দ করে ফেলে। আর নেক ও পুণ্যের কাজগুলো এমনভাবে মানুষের সামনে উপস্থাপন করা হয় যা কঠিন মনে হয়।
জান্নাত-জাহান্নাম
এ বিষয়ে বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জাহান্নাম প্রবৃত্তি দিয়ে বেষ্টিত। আর জান্নাত বেষ্টিত দুঃখ-ক্লেশ দিয়ে। (বুখারী, ৬৪৮৭ ও মুসলিম, ২৮২২, ২৮২৩)।
আমলনায় পাপ-পুণ্য
তবে মানুষ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে পাপে জড়িয়ে পড়লে আল্লাহ তায়ালা মানুষের প্রতি দয়া করেন, তার আমলনামায় শুধু ততটুকু পাপেই লেখেন যতটুকু সে করছে, বিপরীতে যখন প্রবৃত্তির তাড়নাকে পেছনে ফেলে নেক কাজে জড়িয়ে পড়ে তার জন্য দশ গুণ সওয়াব বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে হাদিসে কুদসিতে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা যখন কোন পাপ করার ইচ্ছা করে, তখন তোমরা তা লিখ না যতক্ষণ না সে তা করে। যদি সে তা করে সমান পাপ লিখ। আর যদি সে তা আমার কারণে ত্যাগ করে, তাহলে তার জন্য তা নেকি হিসেবে লিখ। আর যদি সে নেকি করার ইচ্ছা করে কিন্তু সে তা করেনি, তার জন্য তা নেকি হিসেবে লিখ। অতঃপর যদি সে তা করে তাহলে তার জন্য তা দশগুণ থেকে সাতশো গুণ পর্যন্ত লিখ।’ (বুখারি ও মুসলিম)
আরেক হাদিসে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
‘আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা যখন নেকি করার ইচ্ছা করে আমি তার জন্য একটি নেকি লিখি যতক্ষণ সে না করে, যখন সে করে আমি তার দশগুণ লিখি। আর যখন সে পাপ করার ইচ্ছা করে আমি তার জন্য তা ক্ষমা করি যতক্ষণ সে না করে, অতঃপর যখন সে তা করে তখন আমি তার সমান লিখি’
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘ফেরেশতারা বলেন, হে আমার রব আপনার এ বান্দা পাপ করার ইচ্ছা করে, -যদিও আল্লাহ তাকে বেশী জানেন- তিনি বলেন, তাকে পর্যবেক্ষণ কর যদি সে করে তার জন্য সমান পাপ লিখ, যদি সে ত্যাগ করে তার জন্য তা নেকি লিখ, কারণ আমার জন্যই সে তা ত্যাগ করেছে। (মুসলিম, হাদিসটি সহিহ)
জান্নাতের নেয়ামত
পাপ থেকে বেঁচে পূণ্য করা মানুষদের আল্লাহ তায়ালা জান্নাতে বিশেষ পুরস্কার দেবেন। হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেছেন, আমি আমার নেককার বান্দাদের জন্য এমন জিনিস তৈরি করে রেখেছি, যা কোনো চোখ দেখেনি, কোন কান শুনেনি এবং যার সম্পর্কে কোন মানুষের মনে ধারণাও জন্মেনি। তোমরা চাইলে এ আয়াতটি পাঠ করতে পার, কেউ জানে না, তাদের জন্য তাদের চোখ শীতলকারী কী জিনিস লুকানো আছে- (সূরা সিজদা, আয়াত,১৩, বুখারি, ৩২৪৪; মুসলিম, ২৮২৪)
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More