কাজের লোকদের সঙ্গে আপনার আচরণ যেমন হবে
ধর্ম ডেস্ক:
মানুষ নিজের প্রয়োজনেই একে অপরের মুখোপেক্ষী। একা, একাকী স্বয়ংসম্পন্ন হয়ে উঠা মানুষের স্বভাবজাত নয়। বিভিন্ন কাজে অন্যের সাহায্য নিতে হয়। বাসার কাজের জন্য অনেক সময় গৃহকর্মী, কাজের লোক রাখতে হয়।
আমাদের সমাজে বেশির ভাগ সময় গৃহকর্মীদের সঙ্গে অসদাচারণ ও নির্যাতনের কথা শোনা যায়। অধীনস্থ এই কর্মীদের সঙ্গে বাজে আচরণে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জানানো হয়েছে ইসলামে। তাদের সঙ্গে কোমল আচরণের কথা বলা হয়েছে।
হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তারা তোমাদের ভাই। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে তোমাদের অধীনস্থ করেছেন। অতএব তোমরা যা খাও তাদেরকেও তা খাওয়াও আর তোমরা যা পর তাদেরকেও তা পরিধান করাও। তাদেরকে সাধ্যাতীত কোনো কাজের আদেশ করো না। যদি করেই থাকো তবে তাদেরকে সহযোগিতা করো।’ (বুখারি : ২৫৪৫; মুসলিম : ১৬৬১)।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন তোমাদের কারও সামনে তার সেবক খাবার পরিবেশন করে, তখন সে যদি সেবককে সঙ্গে বসাতে না পারে তা হলে এক লোকমা বা দুই লোকমা যেন তার হাতে তুলে দেয়। কেননা খাবার তৈরির কষ্টক্লেশ সে-ই সহ্য করেছে।’ (বুখারি : ২৫৫৭; মুসলিম : ১৬৬৩)।
রাসুল (সা.)-এর আদর্শ হলো, কাজের লোকদের সঙ্গে অত্যন্ত স্নেহপূর্ণ ও মানবিক আচরণ করা। তারা বড় ধরনের কোনো ভুল করে বসলে মমতার সঙ্গে সতর্ক করে শুধরে দিতে হবে আর ছোট ভুল প্রকাশ পেলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে হবে।
বিখ্যাত সাহাবি হজরত আনাস বিন মালেক (রা.) দীর্ঘ ১০ বছর রাসুল (সা.)-এর ঘরের ও বাইরের নানা কাজ করেছেন। তার সঙ্গে রাসুল (সা.)-এর আচরণ কেমন ছিল সে বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মদিনায় ১০ বছর রাসুল (সা.)-এর খেদমত করেছি। আমি ছিলাম অল্পবয়স্ক বালক। আমার সব কাজ রাসুলের মর্জিমাফিক হতো না। কিন্তু এই দীর্ঘ সময় তিনি কখনও আমাকে ধমক দেননি এবং বলেননি যে, এটা কেন করেছ বা এটা কেন করোনি?’ (আবু
দাউদ : ৪৭৭৪)
অধীনস্থ কাজের লোকদের সঙ্গে দায়িত্বশীলরা যে ধরনের আচরণ করবেন-
>> নিজেরা যা খাবেন তাদের তাই খেতে দিন।
>> নিজেরা যা পরিধান করবেন তাদেরও একি ধরনের কাপড় পরতে দেবেন।
>> তাদের ওপর সাধ্যের বাইরে কোনও কাজ চাপিয়ে দেবেন না।
>> কোনও কাজ তাদের জন্য কষ্টসাধ্য মনে হলে এতে তাদের সহায়তা করুন।
>> তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবেন, কখনো কঠোর আচরণ বা কটু কথা বলবেন না।
>> তারা অসুস্থ হলে বা কোনও বিপদে পড়লে তাদের সমবেদনা জানান।
>> তাদের ধর্মীয় বিধি-বিধান ও শরীয়ত অনুযায়ী পরিচালনা করতে হবে। কারণ, অধীনস্থদের দ্বীনের ওপর পরিচালন করা কর্তব্য। এর জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে জবাবদিহীতা করতে হবে।
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More