Main Menu

সৌদিতে বাংলাদেশি গৃহকর্মীদের ধর্ষণ, উপসচিব বরখাস্ত

বিদেশবার্তা২৪ ডেস্ক:
সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের সেফ হোমে আশ্রিত কয়েকজন বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় উপসচিব মো. মেহেদী হাসানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরবে কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশি কয়েকজন নারী ধর্ষণের শিকার হন।

বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর সই করা এক প্রজ্ঞাপনে তার বরখাস্তের আদেশ জারি করা হয়েয়। এর আগেও ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি একই ধরনের অভিযোগে উপসচিব মেহেদী হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা অধিশাখা থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সৌদি আরবের রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাবেক কাউন্সিলর এবং বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (উপসচিব, সাময়িক বরখাস্তকৃত) মো. মেহেদী হাসানের (পরিচিতি নম্বর ১৫০৫২) বিরুদ্ধে দূতাবাসের সেফ হোমে আশ্রিত কতিপয় ‘গৃহকর্মীকে’ যৌন নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে সংশ্লিষ্ট দূতাবাস থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় তাকে রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইং থেকে প্রত্যাহারের আদেশ জারি করে। এরপর শ্রম কল্যাণ উইং থেকে ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি তাকে অবমুক্ত করা হয়। এ অভিযোগের পর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপন জারি করে। পরবর্তী সময়ে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ৩(খ) অনুযায়ী, ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে দায়ের করা বিভাগীয় মামলায় (নম্বর ০৫/২০২১) ওই বছরের ১০ মার্চ অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী জারির মাধ্যমে তাকে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত কর্মকর্তা ২০২১ সালের ৮ এপ্রিল লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর জবাব দাখিল করে ব্যক্তিগত শুনানির প্রার্থনা করলে ২০২১ সালের ১৫ জুন তার ব্যক্তিগত শুনানির জন্য তারিখ ধার্য করা হয়। ব্যক্তিগত শুনানিতে তার দাখিল করা জবাব ও প্রদত্ত বক্তব্য সন্তোষজনক বিবেচিত না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো তদন্ত করার জন্য ২০ জুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তদন্তে মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে দূতাবাসের সেফ হোমে আশ্রিত কতিপয় ‘গৃহকর্মীকে’ অপ্রয়োজনীয় একান্ত সাক্ষাৎকারের নামে অশ্লীল প্রশ্ন ও আচরণসহ বিভিন্নভাবে হেনস্তা করা এবং যৌন নির্যাতন (ধর্ষণ) করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তদন্ত কর্মকর্তা ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর মো. মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ৩(খ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

তদন্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রাদি পর্যালোচনা করে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর ৭(৮) বিধি মোতাবেক অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে গুরুদণ্ড প্রদানের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। একই বিধিমালার ৭(৯) বিধি মোতাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০২৩ সালের ২২ জানুয়ারি তাকে দ্বিতীয় দফায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশে কেন তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত বা বিধিমালায় বর্ণিত অন্য কোনও গুরুদণ্ড প্রদান করা হবে না, তার কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়।

অভিযুক্ত কর্মকর্তা চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি লিখিতভাবে দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর জবাব দাখিল করেন। জবাবে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা এবং তদন্তে প্রমাণিত অভিযোগের বিপরীতে কোনও সন্তোষজনক বক্তব্য দিতে সক্ষম হননি। তার দাখিল করা জবাব ও তদন্ত প্রতিবেদনসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর ৪(৩) (ঘ) বিধি অনুযায়ী ‘চাকরি থেকে বরখাস্ত’ করার গুরুদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হলে কমিশন মো. মেহেদী হাসানকে প্রস্তাবিত গুরুদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত পোষণ করে।

পরবর্তী সময়ে মো. মেহেদী হাসানকে গুরুদণ্ড প্রদানের বিষয়টি রাষ্ট্রপতি অনুমোদন করেছেন। তাই, মো. মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে রুজুকৃত বিভাগীয় মামলায় গুরুদণ্ড হিসেবে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হলো। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *