তাড়াহুড়ো করে নামাজ পড়তে অজুর বদলে তায়াম্মুম করা যাবে?
ধর্ম ডেস্ক:
প্রত্যেক মুসলিমের ওপর প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ। সময় মতো নামাজ আদায়ের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন আল্লাহ তায়ালা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করা মুমিনের অবশ্য কর্তব্য।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১০৩)
সময় মতো নামাজ আদায়ের মাধ্যমে জাহান্নামের আগুন নির্বাপিত হয়। আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর এমন একজন ফেরেশতা আছে, যে প্রত্যেক নামাজের সময় ঘোষণা করে : হে মানবসন্তান, তোমরা তোমাদের সেই আগুনের প্রতি মনোযোগী হও, যা তোমরা (পাপের মাধ্যমে) প্রজ্বলিত করেছ। সুতরাং তা নির্বাপিত কোরো।’ (সহিহ আত-তারগিব, পৃষ্ঠা ৩৫৮)
নামাজ আদায়ের জন্য অজু করা আবশ্যক। অজু ছাড়া নামাজ আদায় হবে না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! যখন তোমরা নামাজে দাঁড়াতে চাও; তখন তোমাদের মুখমণ্ডল ধোও, আর উভয়হাত কনুই পর্যন্ত ধোও, মাথা মাসেহ কর এবং উভয় পা টাখনু পর্যন্ত ধোও।’ (সুরা মায়েদা : আয়াত ৬)
তবে বেশ কিছু কারণে অজুর পরিবর্তে তায়াম্মুম করার অবকাশ দেওয়া হয়েছে ইসলামে। এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা যদি পীড়িত হও অথবা সফরে থাকো অথবা তোমাদের কেউ শৌচস্থান হতে আসে অথবা তোমরা স্ত্রীর সঙ্গে সংগত হও, অতঃপর পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করবে।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৬)।
তবে তায়াম্মুমের মাধ্যমে নামাজ আদায় বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য এ সম্পর্কিত মাসআলাগুলো জেনে নেওয়া অবশ্যক। অন্যথায় অনেক সময় নামাজ আদায় না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যেমন সঠিক মাসআলা না জানার কারণে একজন জানতে চেয়েছেন-
‘কিছুদিন আগে ভোরে ঘুম থেকে উঠে দেখি, সূযোর্দয়ের আর অল্প সময় বাকি আছে। ওই সময় অজু করতে গেলে ওয়াক্ত চলে যাবে। তাই আমি দ্রুত তায়াম্মুম করে নামাজ পড়ে নিই। এখন আমার জানার বিষয় হল, এভাবে তায়াম্মুম করে কি আমার নামাজ আদায় সহীহ হয়েছে?’
এর উত্তরে আলেমরা বলেন, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তায়াম্মুম করা সহীহ হয়নি। কেননা পানির ব্যবস্থা থাকলে অজু করতে গেলে নামাজ কাজা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলেও অজু করাই জরুরি; তায়াম্মুম করলে তায়াম্মুম সহীহ হয় না। সুতরাং এই তায়াম্মুমের মাধ্যমে আদায় করা নামাজ সহীহ হয়নি। পুনরায় তা পড়ে নিতে হবে।
তবে জানাজা ও ঈদের নামাজের হুকুম এর থেকে ভিন্ন। এই দুই নামাজে কখনো যদি এমন হয় যে, অজু করতে গেলে জামাত ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হয় তাহলে তায়াম্মুম করা যাবে।
—কিতাবুল আছল ১/১০৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/১৮৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৩১; আল কাউসার অনলাইন, ফতোয়া, ৬১৬৬. আলমুহীতুর রাযাবী ১/১৬৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৫৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৭; রদ্দুল মুহতার ১/২৪৬
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More