Main Menu

দক্ষিণ অফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে প্রবাসী বাংলাদেশি নিহত

বিদেশবার্তা২৪ ডেস্ক:
দক্ষিণ অফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে হারুনুর রশিদ নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৪ জুন) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় দক্ষিণ অফ্রিকার সোয়াটুত শহরে নিজ দোকানে ডাকাতের গুলিতে নিহত হন তিনি।

নিহত হারুনুর রশিদ (৪৫) নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দীঘির পাড় এলাকার মৃত আবিদ মিয়ার ছেলে। সাত ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি।

তার অপর বড় দুই ভাই আবুল কাশেম ও হাফেজ আবদুল বারিও দক্ষিণ অফ্রিকায় থাকেন। এছাড়া নিহত হারুনুর রশিদের দুই ভাতিজা ও এক ভাগ্নেও দক্ষিণ আফ্রিকাতে রয়েছেন।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে সর্বশেষ বাড়িতে এসেছিলেন। প্রায় ৪ মাস বাড়িতে থেকে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে ফিরে যান দক্ষিণ আফ্রিকায়। সে সময় তার স্ত্রী ছিলেন অন্তসত্ত্বা। বড় সন্তান মেয়ে হওয়ায় আশা করে স্ত্রী রোজিনা আক্তারকে বলেছিলেন আল্লাহ এবার আমাদের ছেলে দেবেন।

২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ছেলে রাফিনের জন্ম হয়। জন্মের পর থেকে শিশু রাফিন ও তার বাবা কেউ কারো মুখ সরাসরি দেখেননি। প্রযুক্তির কল্যাণে একে অপরের সঙ্গে মুখোমুখি হতেন মোবাইল ফোনে কথা বলার সময়। ছেলের বয়স পাঁচ বছর হওয়ার পর থেকে বাবার কাছে আবদার করতে থাকে দেশে আসার জন্য। বাবাও সেরকম প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সময় ও সুযোগ মিলিয়ে বাড়ি এসে ঘুরে যাওয়ার। কিন্তু হারুনুর রশিদের আর কোনোদিন দেশে আসা হবে না। ছেলে রাফিন ও তার বাবা একে অপরকে আর কোনো দিন দেখবে না।

হারুনুর রশিদের ভাতিজা আফ্রিকায় বসবাসরত হাফেজ আবদুল বারির ছেলে মাহমুদুল হাসান জানান, জীবিকার সন্ধানে ২০০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান তার ছোট চাচা হারুনুর রশিদ। সেখানে বড় দুই ভাই আবুল কাশেম ও হাফেজ আবদুল বারি সঙ্গে কয়েক বছর কাটিয়ে নিজে এক ব্যক্তির সঙ্গে পার্টনারে ব্যবসা শুরু করেন। ভালোই চলছিলো তাদের ব্যবসা। বাংলাদেশ সময় শনিবার সন্ধ্যায় নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করছিলেন হারুনুর রশিদ ও তার পার্টনার। কয়েকজন অস্ত্রধারী ডাকাত সোমালিয়ানদের দোকানে ডাকাতি করে তাদের দোকানে হানা দেয়। এসময় চাচার পার্টনার মাটিতে শুয়ে পড়েন। হারুনুর রশিদ ক্যাশে থাকায় তিনি নড়ার সুযোগ পাননি। ডাকাতদের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে হারুনুর রশিদ কিছু টাকা দিয়ে দেন ডাকাতদের। কিন্তু এতে সন্তুষ্ট না হয়ে ডাকাতরা আরো টাকা দাবি করলে হারুনুর রশিদ দোকানের পেছন দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় ডাকাতদল হারুনুর রশিদকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি করে। এতে হারুন গুলিবিদ্ধ হন। পরে ডাকাতরা চলে গেলে স্থানীয়রা হারুনকে বারাগওয়ানা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত হারুনুর রশিদের স্ত্রীর বড় ভাই নাছির উদ্দিন জানান, তার বোনের সঙ্গে ২০০৭ সালে পারিবারিকভাবে হারুনের বিয়ে হয়। তাদের জিনিয়া (১৪) ও রাফিন (৫) নামে দুটি সন্তান রয়েছে। এখন আমাদের একটাই চাওয়া হারুনের লাশটি যেন বাড়িতে আনা যায়। সন্তানরা যেনো তাদের বাবার মুখটা শেষবারের জন্য দেখতে পারে। এজন্য সরকারের সহযোগীতা চান নিহত হারুনের পরিবার।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *