১৪ নারী ছাড়াও আরও যাদের বিয়ে করা হারাম
ধর্ম ডেস্ক:
ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে নারী-পুরুষদের জন্য ১৪ জনকে মাহরাম হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। যাদের সঙ্গে অপরজনের দেখা-সাক্ষাৎ করা জায়েজ, পর্দা করার কোনও বিধান নেই। তবে এই ১৪ জনের সঙ্গে বিয়ে করা নাজায়েজ। ইসলামী পরিভাষায় এই মানুষদের মাহরাম বলা হয়।
নারী-পুরুষের মাহরাম ১৪ জন
কোরআনের আলোকে একজন পুরুষের জন্য মাহরাম নারী হলেন ১৪ জন। তারা হলেন- মায়ের সমপর্যায়ের ৫ জন -১. মা ২. ফুফু (বাবার বোন) ৩. খালা (মায়ের বোন) ৪. শাশুড়ি (স্ত্রী এর মা ) ৫. দুধ-মা (যে মা ছোট বেলায় দুধ খাইয়ে ছিলেন)। বোনের সমপর্যায়ের ৫ জন- ৬. নিজের বোন ৭. নানি (মায়ের মা) ৮. দাদি (বাবার মা) ৯. নাতনি (আপন ছেলে ও মেয়ের কন্যা) ১০. দুধ-বোন। মেয়ের সমপর্যায়ের ৪ জন- ১১. মেয়ে ১২. ভাতিজি (আপন ভাই-এর মেয়ে) ১৩. ভাগ্নি (আপন বোনের মেয়ে) ১৪. ছেলের বউ।
একইভাবে একজন নারীর জন্য মাহরাম পুরুষ হলেন ১৪ জন। তারা হলেন- বাবার সমপর্যায়ের ৪ জন- ১. বাবা ২. চাচা ৩. মামা ৪. শ্বশুর । ভাইয়ের সমপর্যায়ের আরও ৫ জন – তারা হলেন- ৫. সহোদর ভাই ৬. নিজ দাদা ৭. নিজ নানা ৮. নিজ নাতি ৯. দুধ-ভাই। এছাড়াও ছেলের সমপর্যায়ের আরও ৫ জন। তারা হলেন- ১০. ছেলে ১১. ভাইয়ের ছেলে ১২. বোনের ছেলে ১৩. মেয়ের জামাই ১৪. দুধ-ছেলে।
১৪ নারী ছাড়াও আরও যাদের বিয়ে করা হারা
পবিত্র কোরআনের বর্ণনা অনুযায়ী নারী-পুরুষদের জন্য এই ১৪ জনের সঙ্গে দেখা দেওয়া জায়েজ, পর্দা ফরজ নয়, তবে এদের বিয়ে করা যাবে না। তবে এই ১৪ জন ছাড়াও একজন পুরুষের জন্য আরও কয়েক শ্রেণীর নারীর সঙ্গে বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়া হারাম। তারা হলেন-
১. একসঙ্গে চারজনের বেশি নারীকে বিয়ে করা হারাম।
২. ঘনিষ্ঠতম দুই নারীকে একসঙ্গে বিয়ে করা হারাম। অর্থাৎ, এমন দুইজন দুধ সম্পর্কীয় বা নসবী (নিজ বংশের) নারীকে একসঙ্গে বিয়ে করা, যাদের কোনও একজনকে পুরুষ ধরা হলে অন্যজনের সঙ্গে তার বিয়ে বৈধ হবে না। যেমন- ফুফু-ভাতিজি ও আপন দুই বোনকে একসঙ্গে বিয়ে করা হারাম।
কারণ, এদের মধ্যে ফুফুকে যদি চাচা মনে করা হয় তাহলে চাচার সঙ্গে ভাতিজির বিয়ে হারাম, আবার ভাতিজিকে যদি ভাতিজা মনে করা হয়, তাহলে ফুফুর সঙ্গে ভাতিজার বিয়ে বৈধ নয় অথবা দু্ই বোনের মধ্যে কোনও একজনকে ভাই মনে করা হলে ভাইয়ের জন্য বোনকে বিয়ে করা হারাম।
৩. স্বাধীন নারীকে বিয়ে করার পর কোনও ক্রীতদাসীকে বিয়ে করা বৈধ হবে না।
৪. অন্য পুরুষের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বা স্বামীর মৃত্যুর পর নারীর ইদ্দতের সময় পূর্ণ হওয়ার আগে তাকে বিয়ে করা বৈধ হবে না।
৫. মুসলিম পুরুষের জন্য অমুসলিম নারীকে বিয়ে করা হারাম।
৬. কোনও নারীর জন্য নিজের গোলাম বা দাসকে বিয়ে করা হারাম।
৭. স্বামীর জন্য নিজের তিন তালাক দেওয়া স্ত্রীকে বিয়ে করা হারাম। (অন্য কারও সঙ্গে তার (স্ত্রী) বিয়ে হয়ে সেই স্বামী তাকে তালাক দেওয়া বা সেই স্বামীর মৃত্যুর পর ইদ্দত পালনের পূর্বে প্রথম স্বামী তাকে বিয়ে করতে পারবে না।)
৮. যে নারীর সঙ্গে জেনা করা হয়েছে বা যৌন উত্তেজনার সঙ্গে যে নারীকে স্পর্শ বা চুমু দেওয়া হয়েছে- এমন নারীর মেয়ে, নাতনি বা মা, নানীকে বিয়ে করা হারাম। (ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী, ১/২৭৩, তাবঈনুল হাকাইক, ২/১০১, ফাতাওয়ায়ে রাহমানিয়া, ২/ ৮৩)
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More