সংকলনের ১১২ বছর পর জর্ডান থেকে প্রকাশিত হলো সিলেটী আলিমের বই
ধর্ম ডেস্ক:
বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদের সবচেয়ে আলোচিত খতীব ছিলেন সিলেটের গর্ব মাওলানা উবায়দুল হক র.। তাঁর পিতা হাফিজ মাওলানা জহুরুল হকও ছিলেন একজন ক্ষণজন্মা সংস্কারক আলিমে দ্বীন। প্রকাশ-প্রচার তথা লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে শিক্ষাদীক্ষা দাওয়াত তাবলীগ ও সংস্কারমূলক কাজ করে গেছেন আজীবন। যদিও প্রচারবিমুখ অবস্থায়ই দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছিলেন, কিন্তু ছিলেন প্রগাঢ় পাণ্ডিত্যের অধিকারী একজন আলিমে দ্বীন। আধ্যাত্মিকতায় ছিলেন আশরাফ আলী থানভী র. এর খলীফা। ছিলেন অনেক কিংবদন্তীর জনক। শিক্ষা অর্জন করেছেন উপমহাদেশের প্রসিদ্ধ দ্বীনী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দ-এ। শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছেন সেই সময়ের পৃথিবীখ্যাত উলামায়ে কেরামের।
দারুল উলুম দেওবন্দ-এ সহীহ্ হাদীসের গ্রন্থ ‘সুনানে আবু দাউদ’-এর পাঠ গ্রহণ করেছেন সেই সময়ের বিখ্যাত হাদীসবিশারদ আল্লামা আনওয়ার শাহ্ কাশ্মীরির কাছ থেকে। দারুল উলুম দেওবন্দ-এ সুনানে আবু দাঊদ-এর পাঠগ্রহণকালে তিনি আল্লামা আনওয়ার শাহ্ কাশ্মীরী সাহেবের দরসের তাকরীরগুলো (লেকচারসমগ্র) লিখে সংগ্রহ করে রেখেছিলেন আরবীতে। রূপ দিয়েছিলেন প্রকাশযোগ্য পাণ্ডুলিপির। আল্লামা আনওয়ার শাহ্ কাশ্মীরির দরস মানেই যে তা রত্নতুল্য—সেটা বলাই বাহুল্য। মাওলানা জহুরুল হক সিলেটী সেই মূল্যবান দরসসমগ্রকে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এর আগেই তিনি আল্লাহর প্রিয় হয়ে যান। অতঃপর সেই পাণ্ডুলিপিটি আসে তাঁর সুযোগ্য পুত্র খতীব উবায়দুল হক-এর কাছে। তিনিও সেটা প্রকাশের নিয়ত করলেও জীবদ্দশায় তা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তাঁর ইনতিকালের পর বংশানুক্রমে পাণ্ডুলিপিটি হস্তগত হয় খতীবপুত্র (সিলেট দরগাহ মাদরাসার মুহাদ্দিস) মাওলানা আতাউল হক জালালাবাদীর। তিনি এ পাণ্ডুলিপিতে কিছুটা কাজ করেন। ইতোমধ্যে খতীব মাওলানা উবায়দুল হক সাহেবের গ্রামের ইংল্যান্ডপ্রবাসী তরুণ আলিম, সিলেট আঙ্গুরা মাদরাসার সাবেক শিক্ষক মাওলানা মাহফুয আহমদ আনওয়ার শাহ্ কাশ্মীরী র. এর জীবন ও কর্ম নিয়ে গবেষণাকর্মের একপর্যায়ে জানতে পারেন এই পাণ্ডুলিপিটির কথা। তখন তিনি খতীবপু্ত্র মাওলানা আতাউল হক জালালাবাদীর কাছ থেকে ১১২ বছর পূর্বে সংকলিত এ পাণ্ডুলিপিটি সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় কিছু কাজ ও টীকাটিপ্পনী সংযোজন কর প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। আলহামদুলিল্লাহ, অবশেষে জর্ডানের প্রসিদ্ধ প্রকাশনী ‘দারুল ফাত্হ’ গত মাসে এটিকে দুই খণ্ডে ১৩৫৪ পৃষ্ঠায় প্রকাশ করেছে। তুরস্কের বিশিষ্ট গবেষক আলিম শায়খ ডক্টর হামযাহ্ আল বাকরী বইটির নামকরণ করেছেন ‘আলআমালী আলা সুনানি আবি দাঊদ’। এর দ্বারা বিশ্বদরবারে বাংলাদেশী আলিমদের সুনাম আরও ঔজ্জ্বল্যমণ্ডিত হবে এবং মাদরাসাশিক্ষক-শিক্ষার্থীরাসহ আরবি জানা যে কেউ অভাবনীয় উপকৃত হতে পারবেন বলে মনে করেন বিশিষ্ট উলামায়ে কেরাম।
আমরা গ্রন্থটির বহুল প্রচার কামনা করছি।
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More