আজওয়া খেজুরের উপকারিতার কথা যা বলেছেন নবীজি
ধর্ম ডেস্ক:
ইফতার রোজাদারের বিশেষ আনন্দের মুহূর্ত। আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের জন্য দুইটি আনন্দঘন মুহূর্ত রয়েছে। একটি হলো ইফতারের সময় (এ সময় যেকোনো নেক দোয়া কবুল করা হয়)। অন্যটি হলো (কেয়ামতের দিবসে) নিজ প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৭৬৬; বুখারি, হাদিস : ৭৪৯২; মুসলিম, হাদিস : ১১৫১)
ইফতারের ব্যাপারে মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনা হলো- ইফতারে বিলম্ব করা যাবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মানুষ যত দিন পর্যন্ত সময় হওয়ামাত্র ইফতার করবে, তত দিন কল্যাণের সঙ্গে থাকবে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৮৫২)
মহানবী (সা.) আরো বলেন, ‘যত দিন মানুষ সময় হওয়ামাত্র ইফতার করবে, তত দিন দ্বীন বিজয়ী থাকবে। কেননা ইহুদি ও খ্রিস্টানরা ইফতারে দেরি করে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৫)
বেশির ভাগ মানুষ ইফতারের দস্তরখানে খেজুর রাখেন। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইফতারে খেজুর খেতেন। খেজুরের মধ্যে মদিনার আজওয়া খেজুর উৎকৃষ্টমানের। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক পছন্দ করতেন আজওয়া খেজুরের। এই খেজুরের অনেক উপকারীতার কথাও তিনি বলেছেন হাদিসে। এখানে এখানে আজওয়া খেজুরের উপকারিতা-সম্পর্কিত কয়েকটি হাদিস তুলে ধরা হলো—
১. হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আজওয়া জান্নাতের ফল, এতে বিষক্রিয়ার প্রতিষেধক রয়েছে…।’ (তিরমিজি: ২০৬৬)
২. হজরত সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি ভোরে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে, সেদিন কোনো বিষ ও জাদুটোনা তার ক্ষতি করতে পারবে না।’ (বুখারি: ৫৭৬৮)
৩. আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেন, ‘মদিনার উঁচু ভূমির আজওয়া খেজুরে আরোগ্য রয়েছে।’ অথবা তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে এই খেজুর আহার করা বিষনাশক (প্রতিষেধক)।’ (মুসলিম: ৫১৬৮)
৪. আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেন, ‘সকালে সবার আগে (খালি পেটে) (মদিনার) উঁচু ভূমির আজওয়া খেজুর খেলে তা (সর্বপ্রকার) জাদু অথবা বিষক্রিয়ার আরোগ্য হিসেবে কাজ করে।’ (মুসনাদে আহমাদ: ২৩৫৯২) এখানে উঁচু ভূমি বলতে বোঝানো হয়েছে মদিনার পূর্ব দিকের কয়েক মাইল দূরের কয়েকটি গ্রাম।
৫. হজরত সাদ (রা.) বর্ণনা করেন, একবার আমি অসুস্থ হলে রাসুল (সা.) আমাকে দেখতে আসেন। এ সময় তিনি তাঁর হাত আমার বুকের ওপর রাখেন। আমি তাঁর শীতলতা আমার হৃদয়ে অনুভব করি। এরপর তিনি বলেন, ‘তুমি হৃদ্রোগে আক্রান্ত। কাজেই তুমি সাকিফ গোত্রের অধিবাসী হারিসা ইবনে কালদার কাছে যাও। কেননা, সে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক। আর সে যেন মদিনার আজওয়া খেজুরের সাতটা খেজুর নিয়ে বিচিসহ চূর্ণ করে তা দিয়ে তোমার জন্য সাতটি বড়ি তৈরি করে দেয়।’ (আবু দাউদ: ৩৮৩৫)
৬. উরওয়া (রহ.) বর্ণনা করেন, আয়েশা (রা.) পরপর সাত দিন সাতটি আজওয়া খেজুর খেয়ে সকালের উপবাস ভাঙার অথবা এই অভ্যাস তৈরি করার জন্য নির্দেশ দিতেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ২৩৯৪৫)
৭. হজরত আলি (রা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সাতটি আজওয়া খেজুর প্রতিদিন আহার করে, তার পাকস্থলীর প্রতিটি রোগ নির্মূল হয়ে যায়।’ (কানজুল উম্মাল: ২৮৪৭২)
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More