মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যায় যে ব্যাধি
ধর্ম ডেস্ক:
একজন মুমিনের একান্ত-কামনা ও বাসনা থাকে মৃত্যু পরবর্তী জীবনে চিরস্থায়ী জান্নাত লাভ করা। জান্নাত লাভের আশায় মানুষ পৃথিবীতে নিজেকে আল্লাহর বিধানের সামনে সপে দেয়। অন্য অনেকের মতো উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে গা ভাসিয়ে দেয় না।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দুনিয়া মুমিনের জন্য জেলখানা এবং কাফিরের জন্য বেহেশত। (মুসলিম ২৯৫৬, তিরমিজি, ২৩২৪, ইবন মাজাহ ৪১১৩, আহমদ ৮০৯০, ২৭৪৯১, ৯৯১৬)
মুমিন তার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আল্লাহর সন্তুষ্টির আশা রাখে এবং জান্নাত লাভের আশা করে কিন্তু এমন একটি কাজ রয়েছে যা মানুষের নেক আমল নষ্ট করে দেয় এবং তাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। এমন কাজটি হলো- অহংকার।
এই অহংকার একটি কঠিন ব্যাধি।মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যায়।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আর (অহংকারবশে) মানুষকে অবজ্ঞা কর না এবং ঔদ্ধত্যের সাথে পৃথিবীতে চলাফেরা কর না। আল্লাহ কোনো অহংকারী ও দাম্ভিককে পছন্দ করেন না’ (সুরা লুকমান, আয়াত: ১৮)।
এ বিষয়ে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যার অন্তরে এক কণা পরিমাণ অহংকার আছে সে কখনও জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।’
একজন সাহাবী বললো, যদি কেউ সুন্দর পোশাক ও জুতা পছন্দ করে? তিনি (সা.) বললেন, অহংকার বলতে আত্মাভিমানে সত্যকে অস্বীকার করা এবং অন্যকে হেয় চক্ষে দেখা বুঝায়’ (মুসলিম)।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেন, ‘আর পৃথিবীতে দম্ভভরে চলো না। কেননা তুমি কখনো পৃথিবীকে বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং উচ্চতার পর্বতসমও হতে পারবে না’ (সুরা বনী ইসরাঈল, আয়াত: ৩৭)।
হযরত ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, প্রত্যেক পাপের মূলে রয়েছে ৩টি বিষয় তা থেকে আত্মরক্ষা করা উচিত, প্রথমত ঔদ্ধত্য থেকে বাঁচো, কেননা ঔদ্ধত্যই শয়তানকে প্ররোচিত করেছে, যেন সে আদমকে সেজদা না করে দ্বিতীয়ত লোভ সংবরণ করো কেননা এই লোভই আদম (আ.)-কে নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল খেতে উশকিয়ে দিয়েছে।
তৃতীয়ত ঈর্ষা থেকে বাঁচো কেননা এই ঈর্ষার কারণেই আদমের দুই পুত্রের মধ্য থেকে একজন নিজের ভাইকে হত্যা করেছে? (আর রিসালাহ, আল কুশাইরিয়া, বাব আল হামাদি, পৃ: ৭৯)।
অপর একটি হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জাহান্নাম ও জান্নাতের পরস্পরের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক ও আলাপ-আলোচনা হবে। জাহান্নাম বলবে, আমার ভেতর ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অহংকারী লোকেরা প্রবেশ করবে আর জান্নাত বলতে শুরু করবে যে, আমার মাঝে দুর্বল আর গরীবেরা প্রবেশ করবে।
এতে আল্লাহতায়ালা জাহান্নামকে বলেন যে, তুমি আমার শাস্তির প্রকাশকারী যাকে আমি চাই তোমার মাধ্যমে শাস্তি দিয়ে থাকি এবং জান্নাতকে তিনি (আল্লাহ) বললেন, তুমি আমার কৃপার বিকাশস্থল, আমি যাকে চাই তোমার মাধ্যমে কৃপাবর্ষণ করি। আর তোমাদের যা প্রাপ্য তোমরা উভয়ই তা পুরোপুরি পাবে।’ (সহি মুসলিম)
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More