ইসলামে দাড়ি রাখার গুরুত্ব ও ফজিলত
ইসলাম ডেস্ক:
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা-মদিনার ৬৩ বছরের বর্ণাঢ্য জীবনে উম্মতকে দিয়েছেন সুন্দর ও উজ্জ্বলতম পথনির্দেশ। যা উম্মতে মুসলিমাহর কাছে সুন্নত নামেই পরিচিত। তেমনি একটি সুন্নাত দাড়ি রাখা।
এটি ইসলামের বিশেষ চিহ্ন, অন্যতম নিদর্শন, নবি-রাসুলগণের তরিকা ও ইসলামী চিন্তা-চেতনার দিক থেকে দাড়ি রাখার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। পুরুষদের মুখমন্ডলে দাড়ি রাখা মুসলমানদের এক গুরুত্বপূর্ণ চিহ্ন; যা তার মুসলমান হওয়ার অন্যতম একটি পরিচয় বহন করে।
আরবি ‘লিহইয়াহ’-এর বাংলা অর্থ হচ্ছে দাড়ি। এই শব্দটি লাহি বা চোয়াল থেকে আগত। চোয়াল তথা গালে গজানো চুলকেই মূলত দাড়ি বলা হয়।
এছাড়া ইসলামী ফিকাহবিদদের সর্বসম্মতিক্রমে দাড়ি বলা হয়— দুই চোয়ালের দাঁতবিশিষ্ট হাড়ের ওপর গজানো পশম এবং কান ও চোখের মধ্যবর্তী স্থানে গজানো সারিবদ্ধ পশমকে। কোনো কোনো ইসলামী আইনবিদের মতে, ঠোঁটের নিচের অংশে গজানো পশম ও নাকের উভয় দিক সংলগ্ন গালের ওপর গজানো ও থুতনির নিচের নরম অংশে গজানো পশমও দাড়ির অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং এসব পশম কাটা বা উপড়ানো অনুচিত। (রাদ্দুল মুহতার : ১/১০০, ৫/৩৭৩, হিন্দিয়া : ৫/৩৫৮)
হাদিস-সুন্নাহর বিধান অনুযায়ী দাড়ি রাখা ওয়াজিব। আল্লাহর রাসুল (সা.) দাড়ি রাখার আদেশ করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর রাসুল (সা.) মোঁচ কাটার ও দাড়ি লম্বা করার আদেশ করেছেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১/১২৯)
দাড়ি মুণ্ডন করা কিংবা কর্তন (যখন এক মুঠ থেকে কম) করা হারাম এবং কবিরা গুনাহ। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দশটি কাজ প্রকৃতির অন্তর্গত, এর মধ্যে প্রথম দুইটি হচ্ছে- গোঁফ খাটো করা, দাড়ি বড় করা।’ (মুসলিম : ২/৫১১)
হযরত ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন-তোমরা মুশরিকদের বিরোধীতা কর। দাড়ি লম্বা কর। আর গোঁফকে খাট কর।
আর ইবনে ওমর রা. যখন হজ বা ওমরা করতেন, তখন তিনি তার দাড়িকে মুঠ করে ধরতেন, তারপর অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৫৫৩)
হযরত উমর (রা.) নিজেই এক ব্যক্তির দাড়ি ধরে এক মুঠের অতিরিক্ত অংশটুকু নিজেই কেটে দিয়েছিলেন । (ফাতহুল বারীঃ খন্ড-১০ পৃঃ ৩৬২)
ইবনে উমর (রা.) ছিলেন রাসূলের (সা.) আদর্শের পুঙ্খনুভাবে এবং পূর্ণ অনুসারী । তাই তিনি যা করেছেন তা রাসূল (সাঃ) থেকেই জেনে-শুনে করেছেন ।
বুখারি শরিফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফয়জুল বারিতে উল্লেখ আছে- এক মুষ্টির কমে দাড়ি কাটা সব ইমামের ঐকমত্যের ভিত্তিতে হারাম (৪/৩৮০)।
এ বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর ইসলামিক স্কলারর সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, দাড়ি রাখা ওয়াজিব। এর সর্বনিম্ন পরিমাপ এক মুষ্টি। এক মুষ্টির পর দাড়ি কাটার অনুমতি আছে। কিন্তু এক মুষ্টির কমে দাড়ি কাটা অথবা মুণ্ডানো সম্পূর্ণ হারাম।
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More