ওয়াক্ত শুরুর আগে নামাজ পড়া যাবে কি?
ধর্ম ডেস্ক:
একজন মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করার পর তার প্রধান দায়িত্ব হলো হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর অবতীর্ণ কিতাব কোরআন, হাদিস ও শরীয়তের সব বিধানের সামনে নিজেকে সমর্পন করে দেওয়া। নিজের পছন্দ অপছন্দের ওপরে আল্লাহর হুকুমকে প্রাধান্য দেওয়া।
ইমানের পর আত্মসমর্থপনকারী একজন মুসলমানের পরবর্তী প্রধান কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায় সময়মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয় নামাজকে ঈমানদারের জন্য নির্ধারিত সময়ে (আদায় করা) আবশ্যক কর্তব্য করা হয়েছে।’ -(সুরা নিসা : আয়াত ১০৩)
এই আয়াতে নির্ধারিত সময় বলে প্রত্যেক নামাজের জন্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ওয়াক্তসমূহকে বোঝানো হয়েছে। তাই সেই নির্দিষ্ট সময় হলেই তা আদায় করতে হবে। এর আগে আদায় করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। তবে সময় হয়ে যাওয়ার পর আদায় করতে না পারলে তা কাজা করার বিধান রয়েছে।
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, আল্লাহ্ তায়ালা যখনই কোন ফরজ বিধান তার বান্দাদের ওপর অবধারিত করে দিয়েছেন তখনই সেটার একটা সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তারপর যারা সেটা করতে সক্ষম হবে না তাদেরকে ভিন্ন পথ বাতলে দিয়েছেন।
এর ব্যতিক্রম হচ্ছে, আল্লাহর যিকর। এই জিকির এর ব্যাপারে যতক্ষণ কেউ সুস্থ বিবেকসম্পন্ন থাকে, ততক্ষণ আল্লাহ্ তায়ালা কাউকে ওজর-আপত্তি পেশ করার সুযোগ দেননি। সর্বাবস্থায় তাকে জিকির করতে হবে। (তাবারী, আত-তাফসীরুস সহীহ)
এক হাদিসে হজরত আবু আমর শায়বানী (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর বাড়ির দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, এ বাড়ির মালিক আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন,
‘আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, কোন আমল আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়? তিনি বললেন, ‘যথাসময়ে সালাত আদায় করা। ইবনে মাসউদ (রা.) পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, অতঃপর কোনটি?
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.
তিনি বলেন, অতঃপর পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার। ইবনে মাসউদ (রা.) আবার জিজ্ঞেস করলেন, অতঃপর কোনটি? আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, অতঃপর আল্লাহর পথে জিহাদ করা। ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, এগুলো তো আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাকে বলেছেনই, যদি আমি আরো অধিক জানতে চাইতাম, তাহলে তিনি আরো বলতেন। (বুখারি, হাদিস : ৫২৭)
হাদিসে নামাজের ওয়াক্তের ব্যাপারে বিস্তারিত বর্ণনা এসেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, নামাজের প্রথম ও শেষ সময় রয়েছে। যোহরের নামাজের প্রথম সময় হচ্ছে যখন সূর্য হেলে যাবে। আর শেষ সময় হচ্ছে, আসরের ওয়াক্ত প্রবেশ করা পর্যন্ত।
অনুরূপভাবে আসরের প্রথম ওয়াক্ত হচ্ছে, যখন এর ওয়াক্ত হবে। আর তার শেষ ওয়াক্ত হচ্ছে সূর্য হলুদ বর্ণ ধারণ করা পর্যন্ত।
তদ্রুপ মাগরিবের প্রথম সময় হচ্ছে যখন সূর্য ডুবে যায়। তার শেষ সময় হচ্ছে, যখন দিগন্ত রেখা চলে যায়।
আর এশার প্রথম ওয়াক্ত হচ্ছে, যখন দিগন্ত রেখা চলে যায়। আর শেষ ওয়াক্ত হচ্ছে, মধ্য রাত পর্যন্ত।
ফজরের প্রথম ওয়াক্ত হচ্ছে, যখন সুবহে সাদিক উদিত হয়। আর শেষ ওয়াক্ত হচ্ছে, যখন সূর্য উদিত হয়। (তিরমিজি, ১৫১)
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More