Main Menu

‘অচল’ দুই পা নিয়ে কাদা-পানি মাড়িয়ে স্কুলে যায় রুজি

‘অচল’ দুই পা নিয়ে কাদা-পানি মাড়িয়ে স্কুলে যায় রুজি
নিউজ ডেস্ক:
প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলে যেকোনো প্রতিবন্ধকতাকে জয় করা যায় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার শিশু ফাইজা আক্তার রুজি। ৯ বছর বয়সী এই শিশু জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী। দুই হাঁটু মাড়িয়ে তাকে চলাফেরা করতে হয়। তারপরও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে নিয়মিত বিদ্যালয়ে যায় শিশুটি।

গ্রামীণ পাকা সড়ক দিয়ে হাঁটু মাড়িয়ে যাওয়ার সময় সে পায়ে ব্যথা পায়। কখনো চামড়া উঠে গিয়ে রক্ত বের হয়। এজন্য সড়কের নিচ দিয়ে কাদা-পানি মাড়িয়ে স্কুলে যায় শিশুটি। সম্প্রতি অদম্য এই শিশুটির বিদ্যালয়ে যাতায়াতের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজার ইউনিয়নের প্রান্তিক কৃষক শওকত মিয়া ও মোছাম্মৎ মনিরা বেগমের তিন সন্তান। টানাপোড়েনের সংসার চালাতে স্বামী-স্ত্রী দুজনই কৃষিকাজ করেন। এই দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান ফাইজা আক্তার রুজি। শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় বাবা-মা চিন্তিত থাকলেও পড়াশোনার প্রতি প্রবল আগ্রহের কারণে তাদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে সে।

রুজির বাবা শওকত মিয়া বলেন, পাকা সড়ক দিয়ে সে চলাচল করতে পারে না। হামাগুঁড়ি দিয়ে গেলে পায়ে ব্যথা পায়। চামড়া উঠে রক্ত বের হয়। এজন্য সড়ক থেকে নেমে কাদা-পানি মাড়িয়ে স্কুলে যায় সে। আবার পানিতে ভেজা বা কাদা লাগানো পোশাক পরেই মেয়েটি ক্লাস শেষ করে বাড়ি ফিরে আসে।

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও বড় হয়ে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখা শিশু ফাইজা আক্তার রুজি বলেন, ডাক্তার হয়ে বিনামূল্যে গ্রামের মানুষদের ওষুধ দেবো। আমার মতো যারা আছে তাদের বিনা খরচে চিকিৎসা করবো।

দুর্লভপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তন্দ্রা পুরকায়স্থ বললেন, শারীরিক কষ্ট হলেও প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসে মেয়েটি। তারাও তাকে অনেক ভালোবাসেন। পড়াশোনায় তাকে সহযোগিতা করা হয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল গফ্ফার তালুকদার বলেন, মেয়েটির চলাফেরার কষ্ট কমাতে সমাজসেবা কার্যালয়ে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে কোনো লাভ হয়নি।

সুনামগঞ্জ জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক সুচিত্রা রায় বলেন, রুজিকে খুব শিগগির প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তির আওতায় আনা হবে। তাকে একটি বাইসাইকেল দেওয়ারও চেষ্টা করবো।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *