বেলজিয়ামে ১৭ বাংলাদেশি মানব পাচারের শিকার

বিদেশবার্তা২৪ ডেস্ক:
বেলজিয়ামের এন্টওয়ার্প শহরের একটি নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করা অন্তত ১৭৪ জন কর্মী জানিয়েছেন যে তারা মানব পাচারের শিকার হয়েছিলেন৷ ভুক্তভোগীদের মধ্যে ১৭ জন বাংলাদেশি রয়েছেন৷ পশ্চিম ইউরোপে এটা সবচেয়ে বড় মানব পাচারের ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে৷
বেলজিয়ামের সরকারি কৌঁসুলির কার্যালয় থেকে বুধবার জানানো হয়েছে যে ১৭ বাংলাদেশি, ৫২ ফিলিপিনো এবং ১০৫ তুর্কী নাগরিক দাবি করেছেন যে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান তাদেরকে লোভনীয় চাকরি দেয়ার কথা বলে বেলজিয়াম এনেছিল৷
বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হওয়ায় আরো অনেক কর্মী মুখ খুলতে পারেন বলে ধারনা করছেন সরকারি কৌঁসুলি৷
বেলজিয়ামে অস্ট্রিয়ার কেমিক্যাল কোম্পানি বোরিয়ালিসের নির্মাণাধীন হাজার কোটি টাকার প্রোপেন ডিহাইড্রোজেনেশন প্লাস্টিকস প্রকল্পে কাজ করছেন মানব পাচারের শিকার এই সম্ভাব্য ভুক্তভোগীরা৷
গতসপ্তাহে মানব পাচারের অভিযোগ ওঠার পর প্রতিষ্ঠানটি তিনদিন নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখে এবং সেখানে কর্মী নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান আইআরইএম-পন্টিচেলির সঙ্গে চুক্তি স্থগিত করে৷ সোমবার অবশ্য নির্মাণ কাজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বোরিয়ালিস৷
‘‘আমরা যেকোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানাই৷ একারণে আমরা কালোতে আমাদের মেগা প্রকল্পের নির্মাণকাজ পরবর্তী পদক্ষেপ না নেয়া অবধি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে,’’ বলেন প্রতিষ্ঠানটির উইম ডি স্মেট৷
দায় অস্বীকার
ফরাসি ও ইটালীয় দুই গ্রুপের যৌগ উদ্যোগে গড়া প্রতিষ্ঠান আইআরইএম-পন্টিচেলি গত বছর কালো প্লান্টের মেকানিক্যাল এবং পাইপিং কনস্ট্রাকশনের কাজ পায়৷
এক বিবৃতিতে পন্টিচেলি জানিয়েছে যে প্রকল্পে কাউকে যৌথ প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায় নিয়োগ দেয়া হয়নি এবং অন্তর্বর্তীকালীন নিয়োগ সংস্থাগুলোর সঙ্গেও কাজ করেনি প্রতিষ্ঠানটি৷
ভালো বেতনের কাজের আশ্বাস দেয়া হয়েছিল
তবে এই ঘটনা তদন্তের নেতৃত্ব দেয়া কৌঁসুলি বার্ট ওয়েন্স নিশ্চিত করেছেন যে ‘‘মানবপাচারের শিকারদের প্রকল্পটিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল৷’’
বেলজিয়ামের গণমাধ্যম লিখেছে যে ভুক্তভোগীদেরকে তাদের দেশ থেকে নিয়োগ দেয়ার সময় পাইপ ফিটার বা ওয়েল্ডার হিসেবে বিদেশে ভালো বেতনের কাজ দেয়ার প্রতিশ্রুত দেয়া হয়েছিল৷
প্রশিক্ষিত এই কর্মীরা সপ্তাহে ছয়দিন কাজ করে মাসে মাত্র সাড়ে ছয়শো ইউরো বেতন পেতেন৷ এটা কার্যত তাদের যা বেতন পাওয়া উচিত তার এক-চতুর্থাংশ মাত্র বলে মনে করেন ভুক্তভোগীদের সহায়তা করা সংগঠন পেওকে-এর ক্লাউস ফানহাওটে৷
তিনি জানান যে কম বেতন, দুর্বল আবাসন ব্যবস্থা এবং অনেক কর্মীর কাজের অনুমতির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার বিষয়গুলো মানব পাচারের ইঙ্গিত করে৷
‘‘এবারই প্রথম পশ্চিম ইউরোপে এত বড় পর্যায়ে এরকম চর্চার সন্ধান পাওয়া গেলো,’’ বলেন তিনি৷
বেলজিয়ামে নির্মাণাধীন এই প্রকল্পটিতে দেশটির শ্রম আইনের এবং বিদেশি কর্মীদের সেখানে কাজ করার অনুমতি দেয়ারক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা তাও তদন্ত করছে কর্তৃপক্ষ৷
Related News

পাকিস্তানকে আইএমএফ-এর ঋণ দেওয়া কেন ঠেকাতে পারেনি ভারত?
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ গত সপ্তাহে পাকিস্তানের জন্য ১০০ কোটি ডলারের ‘বেলআউট প্যাকেজ’ (সহায়তাRead More

ইউরোপে বৈধভাবে যাওয়ার উপায়
ইউরোপে বৈধভাবে যাওয়ার উপায় পৃথিবীর অন্যতম মহাদেশ ইউরোপ। প্রতিবছর বিশ্বের বিপুল সংখ্যক অভিবাসী, দক্ষ কিংবাRead More