Main Menu

হবিগঞ্জে পানিবন্দি ৭ লাখ মানুষ

নিউজ ডেস্ক:
সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার পানি কালনী-কুশিয়ারা নদী হয়ে নামছে হবিগঞ্জে। জেলার ভাটি এলাকা দিয়ে প্রবাহিত মেঘনা নদীর পানিও বেড়েই চলছে। উজান-ভাটি দুদিক থেকেই হবিগঞ্জে ঢুকছে পানি। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত ৭ লাখ মানুষ। ফলে দুর্ভোগের অন্ত নেই বানভাসিদের।

জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে জেলায় বন্যার পানি ঢুকছে। শুরুতেই বাড়তে থাকে কালনী, কুশিয়ারা, খোয়াইসহ বিভিন্ন নদীর পানি। কুশিয়ারার পানি প্রবল বেগে নবীগঞ্জ ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলা দিয়ে প্রবেশ করে। বাঁধের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙন দেখা দেয়। মুহূর্তের মধ্যেই প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। ক্রমেই পানি বাড়তে থাকায় প্লাবিত হয় বানিয়াচং ও লাখাই উপজেলা। আর সর্বশেষ বুধবার থেকে নতুন করে প্লাবিত হতে থাকে বাহুবল উপজেলাও।

লাখাই উপজেলার করাব গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, বন্যার কারণে উপজেলার কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। রাস্তাঘাট ও হাট বাজার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে বাজারের দোকানপাট ডুবে যায়।

আবুল কাশে জানান, আকস্মিক বন্যায় লাখাই উপজেলায় নিম্নাঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সবগুলো ইউনিয়নেরই অন্তত ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে দরিদ্র মানুষজন।

লাখাই গ্রামের বাসিন্দা আবুল মনসুর রনি জানান, পানির অবস্থা খুব খারাপ। প্রতিনিয়তই পানি বাড়ছে পাচ্ছে। আমাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠে গেছে। ব্যবসা নেই। বাসায়ও পানি উঠে যাচ্ছে।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবুল বশর মাহমুদ বলেন, গত দু সপ্তাহ আগে বন্যার পানি বাড়তে শুরু করে। হঠাৎ আমার ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। পানিতে ভিজেই অনেক কষ্ট করে মালামাল সরাতে হয়েছে। ফ্রিজ, ফার্নিচার সব পানিতে ভিজছে। সরাতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, পানির মধ্যে চুরি বেড়েছে। পানিতে ডুবন্ত ঘরের টিন, পিলার চুরি হয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে একটি ঘরের দুটি পিলার চুরি হয়েছে।

এদিকে প্রতিদিনই বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে খাদ্য সহায়তা দিয়ে চলেছেন জেলা প্রশাসকসহ কর্মকর্তারা। মাঠে আছেন জনপ্রতিনিধিরাও। জেলা প্রশাসন বলছে, বানভাসিদের উদ্ধার তৎপরতা চলছে। একই সঙ্গে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। বন্যা দুর্গতদের জন্য জেলায় ৯৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, জেলার চারটি উপজেলা বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বুধবার থেকে বাহুবল উপজেলায়ও পানি ঢুকতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, বন্যার্তদের অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে আসেননি। তারা গবাদি পশু বা অন্য জিনিসের কারণে বাড়ি ছেড়ে গ্রামের উঁচু জায়গায় অবস্থান নিয়েছেন। কেউ আবার উঁচুতে স্বজন বা প্রতিবেশীর বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে বন্যায় জেলার প্রায় ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *