Main Menu

সিলেটে বন্যায় ২২ জনের প্রাণহানী: নিখোঁজ অনেকেই

নিউজ ডেস্ক:
সিলেটে বন্যায় ২২ জনের প্রাণহানী। বন্যার পানিতে ডুবে ও ছেঁড়া তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এখন পর্যন্ত সিলেট বিভাগে ২২ জনের প্রাণহানী ঘটেছে। এর মধ্যে গতকাল পানিতে ভেসে যাওয়া মা-ছেলেরও লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। গতকাল পর্যন্ত ২২ জনের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়। তবে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থার বিপর্যয়ের কারণে নিখোঁজ ও লাশ উদ্ধারের অনেক খবরই প্রশাসনের কাছে আসছে না বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তাই মৃত্যু ও নিখোঁজের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে বলে মনে করছেন তারা।

 

 

গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের ছাতারখাই হাওর থেকে বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া মা ও ছেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তারা হলেন- ওই ইউনিয়নের মহালীখাল গ্রামের নজমুন নেছা (৫০) ও তার ছেলে রহমান মিয়া (১৪)। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, গত শনিবার বিকেলে ছেলেকে নিয়ে তিনি মেয়ের বাড়ি পাশর্^বর্তী আমিরাবাদ গ্রাম থেকে ফিরছিলেন। এরপর তারা আর বাড়িতে ফিরেননি। বানের পানিতে তলিয়ে যান তারা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ছাতারখাই হাওরে তাদের লাশ ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন জৈন্তাপুর থানার ওসি গোলাম দস্তগীর।

গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা থেকে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে সিদ্দিক আহমেদ (৯) নামের ওই শিশুটি মারা যায়। সে বাঘা ইউনিয়নের গন্ডামারা গ্রামের হাবিব মিয়ার ছেলে। রবিবার বাড়ির পাশে বন্যার পানিতে পড়ে তলিয়ে যায় সিদ্দিক। এরপর খোঁজাখুঁজি করে তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন রাতে তার লাশ ভেসে ওঠে। কানাইঘাটের সাতবাক ইউনিয়নের ঠাকুরেরমাটি এলাকায় মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে ডুবে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার মাছ ধরতে গিয়ে তিনি নিখোঁজ হয়েছিলেন। পরদিন স্থানীয় হাওর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

গত শুক্রবার পানিতে পড়ে নিখোঁজ হন সিলেট সদর উপজেলার নলকট গ্রামের কলেজছাত্র আবদুল হাদি। ওইদিনই তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওইদিন ওই এলাকা থেকে আরেকজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

 

সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও স্থানীয় একটি কলেজের প্রভাষক সেলিম আহমদ জানিয়েছেন, নৌকাডুবিতে উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের সুজাতপুর গ্রামের ছাত্রলীগ নেতা এ কে আবুল কাশেম ও তার দাদি ছুরেতুন নেছা মারা গেছেন।

বন্যায় পানিতে ডুবে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ছৈলা-আফজালাবাদ ইউনিয়নের রাধানগর এলাকার জুনেদ নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাতকের ইউএনও মামুনুর রশীদ। এছাড়া স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, ছাতক পৌরসভার কানাখালী রোডের আখড়া এলাকায় পীযূষ ও জাউয়া বাজার এলাকায় হানিফা বেগম নামে এক স্কুলছাত্রী পানিতে ডুবে মারা গেছে।

মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের আদিত্যের মহাল এলাকায় ঢলের পানিতে তলিয়ে এক শিশু মারা যাওয়ার খবরও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের আয়েশাবাদ চা বাগানে টিলা ধসে রাজ ব্যানার্জি নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

 

এদিকে, বন্যার পানিতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে সিলেট নগরীর খরাদিপাড়ায় নিজ বাসায় মারা গেছেন মহানগর যুবলীগ নেতা টিটু চৌধুরী। এছাড়া, জালালাবাদ থানার নোয়াপাড়া এলাকার নিজ বাসায় বন্যার পানির সাথে আসা ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান মনির হোসেন নামের এক যুবক।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে বন্যাজনিত কারণে ২২ জনের মৃত্যুর খবর তিনি পেয়েছেন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *