Main Menu

ওসমানী হাসপাতালে ও পানি, রোগীদের চরম দুর্ভোগ

নিউজ ডেস্ক:
শ্বাসকষ্ট সমস্যা নিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সিলেটের আখালিয়া এলাকার আনা মিয়া। হাসপাতালের নিচ তলার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন তিনি। শনিবার দুপুওে পানিতে তলিয়ে যায় যায় হাসপাতালের নীচ তলা। আনা মিয়াসহ নিচ তলার সব রোগীদের নেয়া হয় উপরের বিভিন্ন তলায়।

শনিবার বিকেলে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ক্যান্সার ওয়ার্ডের সামনে মেঝেতে শুয়ে আছেন আনা মিয়াসহ বেশ কয়েকজন রোগী। পুরো এলাকা ঘুটঘুটে অন্ধকার।

আনা মিয়া বলেন, আমার প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট। নীচতলায় থাকাকালে অক্সিজেন লাগানো ছিলো। এখানে এসে অক্সিজেন পাচ্ছি না। এখ পর্যন্ত কোন ডাক্তার নার্সও দেখতে আসেনি। মনে হচ্ছে বিনা চিকিৎসায়ই মারা যাবো।

নীচতলার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন বিকাশ দেব। তিনি বলেন, পানি ওঠার পর আমাকে ৪তলার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তু এখানে কোন চিকিৎসা পাচ্ছি না। আবার চারদিকে পানি থাকায় অন্য কোন হাসপাতালেও যেতে পারছি না।

বিকেলে হাসপাতালে গিয়ে বিভিন্ন রোগীদের সাথে আলাপ করে এমন আর্তনাদ আর হাহাকারের কথা শুনা যায়। সিলেট বিভাগের প্রধান এই চিকিৎসাকেন্দ্রে দুপুর থেকেই ঢুকতে শুরু করে পানি। বিকেলের মধ্যে হাসপাতালের নিচতলায় হাঁটু পানি জমে যায়। এরমধ্যে দুপুর থেকে বিদ্যুৎহীন পুরো হাসপাতাল। ফলে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীরা।

বিকেলে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, পুরো হাসপাতালই বিদ্যুৎহীন। ঘুটঘুটে অন্ধকার। হাসপাতালজুড়ে ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এরমধ্যেই হাসপাতাল উপচে পড়ছে রোগীতে।

ছেলে নাজমুল ইসলামকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন আম্বিয়া বেগম। নিচতলায় চিকিৎসাধিন ছিলেন নাজমুল। বন্যার কবলে পড়ে তাকে স্থানান্তর করা হয়েছে দু তলার করিডরে।

আম্বিয়া বেগম বলেন, এখানে আসার পর কোনো সেবা পাচ্ছি না। এখন পর্যন্ত কোন ডাক্তার নার্সেও দেখা পাইনি। এভাবে আরও কিছুক্ষণ থাকলে ছেলের অবস্থা আরও খারাপ হবে।

ভাই সত্যজিত দাশকে নিয়ে আসা রিপন দাশ বলেন, পানির কারণে আমরা এখান থেকে বের হতেও পারছি না। জরুরী ওষুধ এবং খাবারও আনতে পারছি না।
হাসপাতালের ৪র্থ তলার ৫ নম্বও ওয়ার্ডে দায়িত্বরত এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হাসপাতালের নিচতলায় পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে উপরের তলাগুলোতে রোগীর চাপ বেড়েছে। এরমধ্যে বিদ্যুৎ নেই। এসবের মাঝে যতটুকু সম্ভব আমরা সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।

পানি ও বিদ্যুৎহীনতার কারণে হাসপাতলে জরুরী বিভাগে নতুন রোগী ভর্তি বন্ধ রয়েছে। ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে মেডিকেল কলেজও।

ওসমানী মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা শিশির কুমার চক্রবর্তী বলেন, পানি উঠে যাওয়া ও বিদ্যুৎ না থাকায় কিছু সেবায় তো বিঘাœ ঘাটছেই। আমাদেও জেনারেটর কক্ষেও পানি ঢুকে গেছে। ফলে অনেক সেবাই বন্ধ রয়েছে। আমরা বিকল্প জেনারেটর দিয়ে অপারেশন থিয়েটার ও আইসিইউতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে চেষ্টা করছি। এছাড়া জরুরী বিভাগে আপাতত রোগী ভর্তি বন্ধ রয়েছে।

এছাড়া পানির কারণে চিকিৎসক ও নার্সদেরও হাসপাতালে আসতে সমস্যা হচ্ছে।

তিনি বলেন, হল ও ক্যাম্পাসে পানি ঢুকে যাওয়ায় মেডিকেল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *