Main Menu

‘‌বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক পারস্পরিক বিশ্বাসের’

নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক পারস্পরিক বিশ্বাসের। দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে নয় বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেশি লাভবান হচ্ছে। কেউ কেউ বাংলাদেশ-ভারতের এই সম্পর্ক নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে আন্তঃ সড়ক যোগাযোগসহ বানিজ্যিক লেনদেনে খুলছে নতুন নতুন সম্ভাবনার দ্বার। ঐতিহাসিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের উন্নয়নের ভারতের অংশগ্রহণ অব্যাহত থাকবে।

শনিবার (১১ জুন) দুপুরে সিলেটে ধোপাদিঘীর পাড় ওয়াকওয়ে ও সৌন্দর্য বর্ধন কাজের উদ্বোধনকালে এমন মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড একে আব্দুল মোমেন ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কে দ্বেরাইস্বামী।

ভারতীয় সরকারের অর্থায়নে সিলেট নগরের ধোপাদিঘীর পাড় উন্নয়ন, সৌন্দর্য বর্ধন; ক্লিনার্স কলোনী ও চারাদিঘীর পাড়ে স্কুল ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

দুপুরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ভারতীয় হাইকমিশনার ও সিটি মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এসময় বক্তারা ভারত বাংলাদেশের সম্পর্কের নানা দিক তুলে ধরে বক্তব্যে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আপনি চাইলেই প্রতিবেশির সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করতে পারবেন না। আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহাবস্থানের নীতিতে বিশ্বাস করতেন। এই শিক্ষা হাদিসেও আছে। আদিকাল থেকে আমাদের মধ্যে চলে আসছে।

তিনি বলেন, আগে দারিদ্রতা ছিল, কিন্তু সম্পর্কের সহাবস্থানের কারণে আমরা ভাল ছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত; মাঝে মাঝে কিছু লোক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সম্পর্কের অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করে। তাই আমাদের সচেতন থাকার দরকার, যাতে এ ধরণের লোক আমাদের দেশকে শেষ করে দিতে না পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা দারিদ্রতা থেকে মুক্তি পেয়ে উন্নত বিশ্বের দিকে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ভারতের সঙ্গে বড় বড় কয়েকটি কাজ হয়েছে। বিশেষ করে সীটমহলে বিরোধপূর্ণ ভূমি থেকে ভারত পেয়েছে ৭ হাজার একর, বাংলাদেশ পেয়েছে ১৭ হাজার একর। এখানে ভারত বড় ধরণের ছাড় দিয়েছে। এটা ভারত-বাংলাদেশ অবিচ্ছেদ্দ প্রতিবেশী। এটা পরস্পরের প্রতি সম্মান প্রদর্শন। তারপরও বলবো দেনা পাওনাটা বড় নয়। আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা সুন্দর, আত্মবিশ্বাসের। ৭১ সালে তারা আমাদের উপকার করেছে। রাশিয়া আমাদের পাশে ছিল। তাই বলে, তার উপকার করতে না পারি শত্রুতা করবো কেনো? আমরা আমরা তাদের কৃতজ্ঞতাবোধের কথা ভুলে যাবো কেনো? তাদের সঙ্গে সম্পর্ক নেতিবাচক হিসেবে দেখা দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেন।

তিনি আবুল মাল আব্দুল মুহিতের স্মৃতিচারণ করে বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বস্থ, ন্যায়নিষ্ট সৎ ও আদর্শবাদ মানুষ ছিলেন। তিনি দেশের জন্য অনেক শ্রম দিয়েছেন। যে কারণে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, ইন্ডিয়া-মায়ানমার থাইল্যান্ড মিলে ইন্টারস্ট্যাট হাইওয়ে হচ্ছে।সেই হাইওয়েতে বাংলাদেশও সম্পৃক্ত হচ্ছে। সেই রোডটি হবে ভারত-মায়ানমার-বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড। আমরা ভারতের কাছে দরখাস্ত করেছি, আমাদের যুক্ত করতে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেটা গ্রহণ করেছেন। সিলেটের তামাবিলের এই রাস্তার সাথে যুক্ত হবে। এরইমধ্যে ওইপাশে ভারত ৪লেন সড়ক করে ফেলেছে। আমরাও সড়ক সম্প্রসারণ করবো। এটি বাস্তবায়িত হলে দুদেশের বানিজ্যে নতুন সম্ভাবনা দ্বার উন্মোচিত হবে।

তিনি বলেন, আমরা সিলেটে বড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরী করছি। এটা হলে পাশ্ববর্তী দেশের মানুষও সুবিধা নিতে পারবেন। তিনি সিলেট পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের স্থলে উদ্যান করা এবং বঙ্গবন্ধু সেলকে জাদুঘরে রূপান্তরের কথা তুলে ধরেন।

এছাড়া ব্রিটিশ সময়ে দেশের মধ্যে একমাত্র নারী করিমুন্নেছার ফাঁসি হয় এই কারাগারে। সেই ফাঁসির কাস্টটিও সংরক্ষণে রাখা। সেই সঙ্গে ঢাকা কারাগারকেও পার্ক বা উদ্যান তৈরীর দাবি তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ ভারতের ঐতিহাসিক সম্পর্কের পথ ধরে দু-দেশের বানিজ্যিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে মন্তব্য করেন ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দ্বেরাই স্বামী।

অনুষ্ঠানে ধন্যবাদসূচক বক্তব্য দেন আরিফুল হক চৌধুরী। আরো বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী।

এসময উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ সচিব, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোশাররফ হোসেন, সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) বিধায়ক রায়, ডিআইজি প্রিজন কামাল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পরিতোষ ঘোষ, জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান প্রমুখ।

অনুষ্ঠান শেষে ধোপাদিঘীর পাড় উন্নয়ন, সৌন্দর্য বর্ধন এলাকা ঘুরে দেখেন অতিথিরা। এরপর অতিথিবৃন্দ নগরের হাফিজ কমপ্লেক্সে সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত আবুল মাল আব্দুল মুহিতের চেহলাম অনুষ্ঠানে যো্গ দেন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *