Main Menu

যুক্তরাজ্যে পণ্যমূল্য বাড়ানোর পরিকল্পনা অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের

বিদেশবার্তা২৪ ডেস্ক:

যুক্তরাজ্যের অধিকাংশ নির্মাতা উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। তিন মাসের মধ্যে এ দাম বাড়ানো হতে পারে বলে একটি জরিপে জানিয়েছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। এ সমীক্ষাতেই উঠে আসে, আরো মূল্যস্ফীতির চাপে পড়তে যাচ্ছে ব্রিটিশ অর্থনীতি। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

দ্য কনফেডারেশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রি (সিবিআই) বলছে, বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়া ও মজুরি বাড়ার ফলে উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো মনে করছে তিন মাসের মধ্যে তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়ানো যায়। ১৯৭৬ সালের পর এবারই প্রথম একযোগে এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে যুক্তরাজ্যের উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো।

সিবিআইয়ের জরিপে দেখা গেছে, ফেব্রুয়ারিতে ক্রয়াদেশের প্রবাহ বেশ শক্তিশালী। কারণ হিসেবে বৈশ্বিক চাহিদা বাড়ার কথা বলা হচ্ছে। ক্রয়াদেশের এ প্রবাহ উৎপাদকদের জন্য ভালো। এতে উৎপাদনপ্রবাহও গতিশীল থাকে।

কিছু সূচক অনুযায়ী, মহামারীর আগের সময়ের চেয়ে মহামারীকালে পণ্যের বৈশ্বিক চাহিদা বেড়েছে ২০ শতাংশ, যা কাঁচামালের দাম ও আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দামের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। জরিপে দেখা গেছে, ২০ শতাংশের বেশি কারখানা ক্রয়াদেশ বাড়ার কথা নিশ্চিত করেছে, যা গত চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন হিসাব। জানুয়ারিতে এ সংখ্যা ছিল ২৪ শতাংশের বেশি। তবে ফেব্রুয়ারির অবস্থা এখনো আগের চাইতে ভালো।

সিবিআইয়ের উপপ্রধান অর্থনীতিবিদ অ্যানা লিচ বলেন, শক্তিশালী ক্রয়াদেশের কারণে উৎপাদকরা এখনো ভালো অবস্থায় রয়েছেন। কিন্তু চলমান উৎপাদন খরচের চাপের কারণে আগামী তিন মাসে পণ্যমূল্য বেশ বেড়ে যেতে পারে। সে কারণে অধিকাংশ উৎপাদক প্রতিষ্ঠানই দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন।

এজন্য উৎপাদকদের সহায়তা করতে বিনিয়োগে প্রণোদনা বাড়ানোর বিষয়ে আগেই সরকারকে অনুরোধ করেছিলেন বলে জানান অ্যানা।

চলতি মাসে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড এক পূর্বাভাসে জানায়, আগামী এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি চূড়ায় পৌঁছতে পারে। সে সময় মূল্যস্ফীতির হার ৭ দশমিক ২৫ শতাংশে উঠতে পারে। যখন খানাভিত্তিক জ্বালানির ব্যয় অনেকটুকু বাড়বে।

জাতীয় কৃষক ইউনিয়নের সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে ব্যাংকটির ডেপুটি গভর্নর স্যার ডেভ র্যামসডেন বলেন, ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে সুদের হার পরিমিত পরিমাণে বাড়ানো হলে তা যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির চাপের সঙ্গে লড়াই করতে পারবে। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বসহ নানা কারণে দীর্ঘমেয়াদে কী হবে সেটা বলা যাচ্ছে না।

চলতি মাসেই সুদের হার শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশে নিচ্ছে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। কিন্তু সব ব্যাংক এত দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। মুদ্রানীতি কমিটির অন্য তিন সদস্য সুদের হার আরো বাড়িয়ে শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশে উন্নীত করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। র্যামসডেন আরো বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতিতে আরো কিছু কঠোর ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।

রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব এরই মধ্যে বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞার প্রবাহ শুরু করেছে। বিশেষ করে রাশিয়ার নর্ডস্ট্রিম-২ গ্যাস পাইপলাইনের ওপর জার্মান সরকারের নিষেধাজ্ঞা জ্বালানির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে উঠে আসতে পারে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সামনের দিনগুলোতে আরো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে। ইউক্রেন-রাশিয়া সংকট সৃষ্টি না হলে দাম বাড়ার পূর্বাভাসও দিতে হতো না। তাই পরিস্থিতি সামনের দিনগুলোতে কী হয় তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তাই কখন কীভাবে মুদ্রানীতি পরিচালিত হতে পারে সে বিষয়ে পূর্বাভাস দেয়া কঠিন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *