ঋণ পরিশোধে সহযোগিতা করলে যে সওয়াব
আহমাদ রাইদ, অতিথি লেখক:
সবার অর্থনৈতিক অবস্থা সব সময় অনুকূল থাকে না। কিন্তু সমস্যা ও প্রয়োজন মানুষকে কখনো কখনো ঋণ করতে বাধ্য করে। তাই বাধ্য হয়ে অন্যের সহযোগিতার মুখাপেক্ষী হতে হয়। তাই জীবন চলার পথে ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধ করা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
ইসলাম এ বিষয়ে মানুষকে উত্কৃষ্ট পদ্ধতি ও দিকনির্দেশনা দিয়েছে। মহান আল্লাহ মানবজাতিকে ঋণ গ্রহণ করার অনুমতি দিয়েছেন, তেমনি যথাসময়ে ঋণ পরিশোধের ব্যাপারে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। এখানে বিপদগ্রস্তকে ঋণ দেওয়ার প্রতিদান সম্পর্কে হাদিসে বিভিন্ন ফজিলতের কথা এসেছে।
ঋণ দেওয়ার সওয়াব
কাউকে নেকির আশায় বা সহযোগিতার জন্য কর্জে হাসানা প্রদান করা আল্লাহর পথে দান-সদকা করার সমতুল্য। এমনকি ঋণ দানকে দান-সদকার চেয়েও বেশি মর্যাদাপূর্ণ বলা হয়েছে।
আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘এক ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করে তার দরজায় একটি লেখা দেখতে পেল যে সদকার নেকি ১০ গুণ বৃদ্ধি করা হয় এবং ঋণ দানের নেকি ১৮ গুণ বৃদ্ধি করা হয়।’ (সিলসিলা সহিহাহ, হাদিস : ৩৪০৭)
ঋণ পরিশোধে সহযোগিতার সওয়াব
জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) এমন ব্যক্তির জানাজা পড়তেন না, যিনি ঋণ রেখে মৃত্যুবরণ করেছেন এবং পরিশোধের কোনো ব্যবস্থা রেখে যাননি। একবার এমন এক ব্যক্তির জানাজা উপস্থিত হলো। রাসুল (সা.) জিজ্ঞেস করেন, তার কোনো ঋণ আছে কি? লোকেরা বলল, জি, দুই দিনার। অন্য বর্ণনা মতে, ১৮ দিরহাম।
রাসুল (সা.) বলেন, পরিশোধের কোনো ব্যবস্থা রেখে গেছে কি? জবাব এলো, না। রাসুল (সা.) বলেন, এমন ব্যক্তির জানাজা আমি পড়ব না; তোমরা পড়ো। সাহাবায়ে কেরাম হতাশ হলেন। বেশি হতাশ হলেন আবু কাতাদাহ (রা.)। মৃত ব্যক্তির পুরো ঋণের জিম্মাদারি নিজেই নিয়ে নিলেন এবং রাসুল (সা.)-এর কাছে গিয়ে বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমিই তার ঋণের পূর্ণ জিম্মাদারি নিলাম। আপনি তার জানাজা পড়িয়ে দিন। অতঃপর রাসুল (সা.) জানাজা পড়লেন। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘ঋণী ব্যক্তি পরকালে তার ঋণের বেড়াজালে আবদ্ধ থাকবে।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৪১৫৯, ২২৬৫৭)
উল্লেখ্য, ঋণী ব্যক্তির জানাজা না পড়া নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ছিল। যখন আল্লাহ তাআলা রাসুল (সা.)-কে (খাইবার বিজয়ের মাধ্যমে) আর্থিক সচ্ছলতা দান করেন, তখন থেকে জানাজা পড়তেন এবং ঋণ নিজের জিম্মায় নিয়ে নিতেন। অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে তা পরিশোধ করতেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৪১৫৯)
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More