Main Menu

ইউরোপজুড়ে শ্রমিক সংকট, বাংলাদেশিদের জন্য খুলছে বৈধ সুযোগ

নিউজ ডেস্ক:
করোনাভাইরাস মহামারি পরবর্তী সময়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সেক্টরে কর্মী সংকট দেখা দেবার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ইউরোপের দেশ গ্রীস, মল্টা এবং ইতালিতে বিভিন্ন খাতে বৈধভাবে জনশক্তি নেয়া হবে। এছাড়া ব্রিটেনেও কর্মী সংকট রয়েছে।

বাংলাদেশের কর্মকর্তারা আশা করছেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এই কর্মী সংকট বাংলাদেশের জন্য একটি সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত করতে পারে। তারা বলছেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে হয়তো বৈধভাবেই বাংলাদেশী কর্মীরা যাওয়ার সুযোগ পাবে।

ইউরোপে অবৈধভাবে প্রবেশের জন্য ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে বহু বাংলাদেশি প্রতিনিয়ত সমুদ্রে ডুবে মারা যাচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে গ্রিসে কৃষি খাতে শ্রমিক পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ ও গ্রিসের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে বুধবার।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মনিরুছ সালেহীন বলেন, এই প্রথম ইউরোপের কোন দেশের সাথে বৈধ পথে শ্রমিক পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ সমঝোতা করেছে।

গ্রিসে কিভাবে যাবেন শ্রমিকরা?
অবৈধ পথে ইউরোপে প্রবেশ করার অন্যতম গেটওয়ে বা দুয়ার হচ্ছে গ্রিস। বিভিন্ন সময় অনেক বাংলাদেশি অবৈধ পথে গ্রিসে প্রবেশ করেছে। তাদের অনেকে সে দেশে অবৈধভাবে বসবাস করছেন। আবার অনেকে ইউরোপের অন্য কোন দেশে যাবার আশায় গ্রিসে ঢুকেছে।

বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব জানিয়েছেন, এ সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী গ্রিস বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর চার হাজার শ্রমিক নেবে। এসব শ্রমিকরা সেখানে গিয়ে ‘সিজনাল ওয়ার্কার’ বা মৌসুমি শ্রমিক হিসেবে কাজ করবেন।

শুধু নতুন শ্রমিক নয়, নতুন সমঝোতা স্মারকের আওতায় গ্রিসে অবস্থানরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের পর্যায়ক্রমে বৈধ করা হবে । “মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, অবৈধ পথে যাতে কেউ না যায়। ঐ পথ যাতে লোকজন পরিহার করে,” বলেন মি. সালেহীন।

বৈধ পথে যারা যাবেন তারা পাঁচ বছরের জন্য ভিসা পাবেন। তাদের বেতন-ভাতা সে দেশের আইন অনুযায়ী নির্ধারিত হবে। গ্রিসে কাজের জন্য লোকের চাহিদা রয়েছে। সে অনুযায়ী তারা বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিতে চায়।

এথেন্সে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) বিশ্বজিত কুমার পাল বিবিসি বাংলাকে বলেন, যারা বৈধভাবে আছে তাদের সর্বনিম্ন মজুরী ঘণ্টায় পাঁচ ইউরো। তবে ব্যক্তির কাজের দক্ষতার উপরও মজুরী নির্ভর করে।

“বৈধ পথ না থাকায় অবৈধ পথে মানুষ যাচ্ছে। অবৈধ পথে যাচ্ছে কেন? নিশ্চয় সেখানে চাহিদা আছে। সেখানে যদি তার কাজের সুযোগ না থাকে, তাহলে কেন যাচ্ছে?” বলেন মি. পাল।

বিদেশী কর্মী নেবে মাল্টা
ইউরোপের দেশ মাল্টা প্রচুর বিদেশি কর্মী নেবে বলে জানা গেছে। করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে ২০২০ সাল থেকে মাল্টায় বিদেশি কর্মী নিয়োগ স্থবির হয়ে পড়েছে।

মাল্টার সরকার মনে করছে, দেশটির অর্থনীতির জন্য বিদেশী কর্মী খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অবকাঠামো, পর্যটন, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিদেশি কর্মী দরকার। ‘জবপ্লাস’ নামে মাল্টার একটি এমপ্লয়মেন্ট এজেন্সির হিসেবে দেখা যাচ্ছে, দেশটিতে ২০০৯ সালে ১০ হাজার বিদেশী কর্মী ছিল।

২০২০ সালে সেটি এসে দাঁড়িয়েছে ৬৭ হাজার। অর্থাৎ প্রতিবছরই দেশটিতে বিদেশী কর্মী নিয়োগ বাড়ছে। মাল্টার সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক দেখভাল করে এথেন্সে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। এথেন্সে বাংলাদেশ দূতাবাসের বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, “মাল্টার সাথে আমাদের কথাবার্তা হচ্ছে। তারাও বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিতে আগ্রহী।”

বৈধভাবে ইতালিতে যাবার সুযোগ
ইতালির সরকার এরই মধ্যে ঘোষণা করেছে যে বিভিন্ন খাতে সিজনাল শ্রমিক নেয়া হবে। ইতালির কৃষিখাত বিদেশী শ্রমিকদের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। দেশটির কৃষি এবং পর্যটন খাতে লোক নিয়োগের কার্যক্রম এরই মধ্যে শুরু হয়েছে।

২০২২ সালে দেশটিতে ৭০ হাজার বিদেশী কর্মীকে চাকরি দেয়া হবে। যেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মী প্রয়োজন তারা বিদেশী কর্মী নিয়োগের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করবেন। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের চাহিদার মাধ্যমেই শুধু কর্মী যেতে পারবে। এছাড়া শ্রমিক সংকট সামাল দেবার উপায় হিসাবে অবৈধ পথে গিয়ে ইতালিতে যারা বসবাস করছেন তাদেরকেও বৈধ করা চিন্তাভাবনা করছে দেশটির সরকার।

কর্মী সংকট রয়েছে ব্রিটেনে
একদিকে করোনাভাইরাস মহামারি এবং অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেন বের হয়ে যাবার পরে সেদেশের বিভিন্ন সেক্টরে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। অ্যাকাউন্ট্যান্সি এন্ড অ্যাডভাইসরি ফার্ম বিডিও এক জরিপে বলেছে কর্মী সংকটের কারণে মাঝারি আকারের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভীষণ চাপের মুখে আছে।

অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদন কমানোর চিন্তা করছে। আবার অনেকে বেশি বেতনে নতুন কর্মী আকর্ষণ করতে চাচ্ছে। সূত্র: বিবিসি






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *