Main Menu

শাবিতে আন্দোলনকারী ছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা

নিউজ ডেস্ক:
শাবিপ্রবি (সিলেট): তিন দফা দাবি ও বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজাসহ প্রভোস্ট বডির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর প্রশাসনের উপস্থিতিতে হামলার অভিযোগ উঠেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।

শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে শিক্ষার্থীদের ওপর এ হামলা চালায় ছাত্রলীগ।

হামলায় ১০-১২ জন শিক্ষার্থী আহত এবং হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে কয়েকজন ছাত্রী হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে।
আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- শাহরিয়ার আবেদীন, ইয়াছির সরকার, সামিউল সাফিন, নাফিজ হাসান, অন্তিক, রুপেল চাকমা ও মাইনুল ইসলাম রাশু।

হামলার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদ এবং প্রক্টর ড. আলমগীর কবীর উপস্থিত ছিলেন। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এর আগে শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর সংলগ্ন সড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। এতে সন্ধ্যায় দিকে এ হামলা চালানো হয়।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, প্রক্টরিয়ার বডির সদস্যরা এসে শিক্ষার্থীদের এক পাশের রাস্তা ছেড়ে দিতে বলেন। পরে একপর্যায়ে অ্যাম্বুলেন্স ঢুকানোর চেষ্টা করলে ছাত্রীরা অ্যাম্বুলেন্স যাওয়ার সুযোগ করে দেন। কিন্তু পেছনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ঢুকে আন্দোলন ভণ্ডুল করার চেষ্টা করে। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে আন্দোলনে সমর্থনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১০-১২ জন আহত হন।

হামলাকারীদের মধ্যে রয়েছেন- বিশ্বদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মৃন্ময় দাস ঝুটন, আশরাফ কামাল আরিফ, খলিলুর রহমান, রিশান তন্ময়, মাহবুবুর রহমান, সাজ্জাদ হোসেন, শফিউল হক রাব্বী, আবু বক্কর, সজীবুর রহমান, মামুন শাহ, রিশাদ ঠাকুর, সাব্বির হোসেন, সুমন সরকারসহ অনেকে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ছয়টি গ্রুপের নেতাকর্মীরা এই হামলা চালিয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন।

হামলার বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা আশরাফ কামাল আরিফ বলেন, ‘আমরা একটা অ্যাম্বুলেন্সকে পথ করে দিতে গেলে তারা বাধা দেয়। তখন এ নিয়ে আমাদের সঙ্গে একটু হাতাহাতি হয়। ’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. আলমগীর কবীর বলেন, ‘একটি অ্যাম্বুলেন্সকে রাস্তা করে দিতে সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থী যান। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্স যেতে বাধা দিলে একটু হাতাহাতি হয়। এছাড়া সেখানে বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। ’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মুঠোফোনেব একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

রাতে এক ব্রিফিংয়ে আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্রী সাদিয়া বলেন, আমাদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা চালানোর পর সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারাও আমাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছেন। আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই অন্য হলের এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

এর আগে তিনি বলেন, সডকে অ্যাম্বুলেন্স আসলে আমরা সেটাকে পথ করে দিই। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সের পেছনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের মাঝে ঢুকে পড়ে। এ সময় তারা ছাত্রীদেরকে ধাক্কা দিতে থাকে এবং একপর্যায়ে আন্দোলনে সংহতি জানাতে আসা ছাত্রদের বেড়ধক মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

ছাত্রীদের এই আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোট।

মশাল মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবন পর্যন্ত গিয়ে শনিবারের কর্মসূচি শেষ করা হয়। ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং প্রশাসনের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের হামলায় প্রতিবাদে রোববার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় আবার আন্দোলনে নামবেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- দায়িত্বহীন প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগ, অবিলম্বে হলের যাবতীয় অব্যস্থপনা নির্মূল করা এবং হলের স্বাভাবিক সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করা, অবিলম্বে ছাত্রীবান্ধব এবং দায়িত্বশীল প্রভোস্ট কমিটি নিয়োগ দেওয়া। সূত্র: বাংলানিউজ






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *