Main Menu

জানা-অজানা শিরক থেকে বেঁচে থাকার দোয়া

ইসলাম ডেস্ক:
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতএব যে তার প্রভুর সাক্ষাৎ কামনা করে; সে যেন সৎকাজ করে এবং তার প্রভুর উপাসনায় কাউকে শরিক না করে।’ প্রভুর সাক্ষাতের জন্য শুধু সৎকাজ করলেই হবে না বরং শিরকমুক্ত সৎকাজ করতে হবে। তা হতে পারে ছোট শিরক কিংবা বড় শিরক। এ সব শিরকের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকাত কী বলেছেন বিশ্বনবি? এ সম্পর্কে করণীয়ই বা কী?

আল্লাহ তাআলা বলেন-

فَمَنۡ کَانَ یَرۡجُوۡا لِقَآءَ رَبِّهٖ فَلۡیَعۡمَلۡ عَمَلًا صَالِحًا وَّ لَا یُشۡرِکۡ بِعِبَادَۃِ رَبِّهٖۤ اَحَدً

‘সুতরাং যে তার প্রতিপালকের সাক্ষাৎ কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম করে এবং তার প্রতিপালকের উপাসনায় কাউকেও শরিক না করে।’ (সুরা কাহফ : আয়াত ১১০)

ছোট ও বড় শিরক থেকে বাঁচতে প্রতিদিন তিনবার এ দোয়াটি পড়া-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ شَيْئًا وَأَنَا أَعْلَمُ وَأَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لاَ أَعْلَمُ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা আন উশরিকাবিকা শাইয়ান ওয়া আনা আঅলামু ওয়া আসতাগফিরুকা লিমা লা আঅলামু।’

শিরকের ভয়াবহতা

নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শিরকের ভয়াবহতা ও তা থেকে বাঁচার দিকনির্দেশনা তুলে ধরেছেন হাদিসের একাধিক বর্ণনায়। তাহলো-

১. হজরত মাহমুদ ইবনে লবিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমি তোমাদের সম্পর্কে যে বিষয়ে সর্বাধিক আশংকা (ভয়) করি, তা হচ্ছে ছোট শিরক। সাহাবায়েকেরাম জানতে চাইলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ছোট শিরক কী? তিনি বললেন, ‘রিয়া’।’ (মুসনাদে আহমাদ)

২. অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, ‘কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা যখন বান্দাদের কাজকর্মের প্রতিদান দেবেন, তখন রিয়াকারী লোকদের বলবে, ‘তোমরা তোমাদের কাজের প্রতিদান নেওয়ার জন্য তাদের কাছে যাও, যাদেরকে দেখানোর উদ্দেশ্যে তোমরা কাজ করেছিলে। এরপর দেখ, তাদের কাছে তোমাদের জন্য কোনো প্রতিদান আছে কি না। কেননা আল্লাহ শরিকদের শরিকানার সম্পূর্ণ অমুখাপেক্ষী।’ (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ, বায়হাকি)

৩. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন যে, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি শরিকদের সঙ্গে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার ঊর্ধ্বে। যে ব্যক্তি কোনো সৎকর্ম করে এবং তাতে আমার সঙ্গে অন্যকেও শরিক করে, আমি সেই আমল শরিকের জন্য ছেড়ে দেই।

অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, আমি সেই আমল থেকে মুক্ত; সে আমলকে আমি তার জন্যই করে দেই, যাকে সে আমার সঙ্গে শরিক করেছিলো।’ (মুসলিম)

৪. হজরত ব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন, যে ব্যক্তি সুখ্যাতি অর্জনের জন্য সৎকাজ করে আল্লাহ তাআলাও তার সঙ্গে এমনি ব্যবহার করেন; যার ফলে সে ঘৃণিত ও লাঞ্ছিত হয়।’ (মুসনাদে আহমাদ)

মনে রাখতে হবে

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘পিপড়ার নিঃশব্দ গতির মতোই শিরক তোমাদের মধ্যে গোপনে অনুপ্রবেশ করে।’ তিনি আরো বললেন, ‘আমি তোমাদের একটি উপায় বলে দিচ্ছি যা করলে তোমরা বড় শিরক ও ছোট শিরক থেকে নিরাপদ থাকতে পারবে। তোমরা প্রতিদিন তিনবার পড়বে-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ شَيْئًا وَأَنَا أَعْلَمُ وَأَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لاَ أَعْلَمُ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা আন উশরিকাবিকা শাইয়ান ওয়া আনা আঅলামু ওয়া আসতাগফিরুকা লিমা লা আঅলামু।’

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার সঙ্গে কাউকে শরিক করা থেকে আশ্রয় চাই। জানা-অজানা (শিরক-গুনাহ) থেকেও ক্ষমা চাই।’ (মুসনাদে আবু ইয়ালা, মাজমাউয যাওয়ায়েদ)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, ঘরে কিংবা বাইরে, নিজের কিংবা অন্যের যে কোনো কাজ শুধু আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করা। যখনই কোনো ভালো কাজের সঙ্গে অন্য কাউকে সম্পৃক্ত করা হয়; তখনি তাতে ছোট হোক কিংবা বড় হোক শিরকের ভয় থাকে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় ছোট-বড় সব শিরক থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। হাদিসের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। শিরক থেকে বাঁচতে প্রিয় নবির শেখানো দোয়াটি প্রতিদিন পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *